বিপণিবিতান, বিদ্যালয় ঘিরে সক্রিয় পকেটমার চক্র, নিশানা নারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে গড়ে উঠেছে ‘পকেটমার চক্র’, যার সদস্যরা নারী। এই চক্রের সদস্যসংখ্যা শতাধিক হতে পারে। তারা মূলত বিপণিবিতান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বাসস্ট্যান্ডের মতো জনসমাগম স্থানগুলোতে ঘুরে বেড়ান। নারীদের নিশানা করেন। ভিড়ের মধ্যে সুযোগ বুঝে নারীদের ব্যাগ থেকে মুঠোফোন, টাকা, স্বর্ণালংকার নিয়ে যান তারা। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একাধিক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।

ডিবির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, কয়েকটি ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে আমরা ঢাকায় পকেটমার চক্রের খোঁজ পাই। ঢাকার দক্ষিণ এলাকায় এমন অন্তত ২৫ জন নারী পকেটমার রয়েছেন। পুরো ঢাকায় এই চক্রের সদস্যসংখ্যা এক শর বেশি হবে বলে ধারণা করছি। আমরা ইতিমধ্যে এই চক্রের কিছু সদস্যকে শনাক্ত করেছি।’

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট ডিবি সূত্র জানায়, ঢাকায় নারী সদস্য রয়েছেন এমন কয়েকটি পকেটমার চক্র সক্রিয়। প্রতিটি চক্রের সদস্য দুই থেকে পাঁচজন নারী। ডিবির লালবাগ বিভাগ এই চক্রের ১৪ সদস্যকে ইতিমধ্যে শনাক্ত করেছে। চক্রের সদস্যরা সাধারণত বোরকা পরে বিপণিবিতান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বাসস্ট্যান্ডে ঘুরে বেড়ান। সুযোগ বুঝে নারীদের ব্যাগ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যান। এসব সামগ্রী তারা কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট ডিবি কর্মকর্তাদের ধারণা, পকেটমার চক্রের সদস্যরা নারী হলেও তাদের পেছনে কেউ রয়েছে। তাদের কাছে থেকে যারা মূল্যবান জিনিসপত্র কেনেন, তেমন একাধিক ব্যক্তিকেও শনাক্ত করা হয়েছে।

ঢাকার অনেক নারী অভিভাবক তাদের সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আনা-নেওয়া করেন। তাদের নিশানা করেন নারী পকেটমার চক্রের সদস্যরা। তারা ক্লাস শুরু ও ছুটির সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান নেন। ভিড়ের মধ্যে তারা নারী অভিভাবকদের ব্যাগ থেকে মুঠোফোন, টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে সটকে পড়েন।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এলাকায় এই চক্রের তৎপরতার তথ্য পেয়েছে ডিবির লালবাগ বিভাগ।

ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল, অভিজাত বিপণিবিতান ও ব্যস্ত বাসস্ট্যান্ডগুলোতে এই চক্রের সদস্যেরা সক্রিয় আছেন বলে ডিবি জানতে পেরেছে। ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চক, বসুন্ধরা সিটিসহ বিভিন্ন বিপণিবিতান এলাকায় পকেটমার চক্র সক্রিয়। এলাকা ভাগ করে কাজ করেন চক্রের সদস্যরা।

নিউমার্কেট, আজিমপুর ও বকশিবাজার এলাকায় যে চক্রটি সক্রিয়, তার সদস্য পাঁচজন। তাদের মধ্যে তিনজন পকেটমারিতে অংশ নেন। বাকি দুজন জিনিসপত্র সংরক্ষণ ও বিক্রি করেন। তারা দিনে দুই থেকে পাঁচজনের পকেট মারেন।

শেয়ার করুন