অর্থনীতির সংকট আরও বেশি ঘনীভূত হয়েছে সংকট সমাধানের আশ্বাসে। কারণ, সংকট সমাধানে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, শুধু আশ্বাসই দেওয়া হয়েছে। এতে করে সংকট সমাধানে সরকারের যে সক্ষমতা ছিল, তা–ও কমে এসেছে বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)।
পিআরআই বলছে, সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে গত এক বছরে যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছে, তা গত ৫০ বছরে নেওয়া হয়নি। ফলে ব্যাংক খাতে এখন পর্যাপ্ত অর্থ নেই। তাতে সরকারের অর্থনৈতিক সক্ষমতা কমে এসেছে। টাকার খোঁজে বাজেটে রাজস্ব আয়ের অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অনেক দিন ধরে অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণে বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা উপেক্ষা করার ফলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করে পিআরআই।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীতে পিআরআইয়ের সম্মেলনকক্ষে বাজেট–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব মন্তব্য করা হয়। বাজেট–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন হলেও সামষ্টিক অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি ও আগামী দিনের করণীয় নিয়েও আলোচনা করা হয়। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, অর্থনীতির সংকট উত্তরণে আগামী ছয় মাসের মধ্যে তিনটি পদক্ষেপ নিতে হবে। সেগুলো হচ্ছে রাজস্ব ঘাটতি কমিয়ে আনতে সরকারের ব্যয় সংকোচন, ডলারের সংকট কাটাতে বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহারের সীমা তুলে দেওয়া।
পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, যে কথাগুলো আমরা এখন বলছি, তা নতুন নয়। এক বছর ধরে এসব কথা বলে আসছি আমরা। অনেক দিন ধরে বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা উপেক্ষা করার ফলে অর্থনীতিতে সংকট আরও গভীর হয়েছে। তাতে সরকারের সক্ষমতা কমেছে। এখন রাতারাতি এই সক্ষমতা বাড়ানো যাবে না। কারণ, সরকারের ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে, কিন্তু আয় সেভাবে বাড়েনি। তাই প্রশাসনিক ব্যয় কমিয়ে আনতে হবে। প্রয়োজনে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি কাটছাঁট করতে হবে। সেটি করা না হলে সামষ্টিক অর্থনীতির বিষয়গুলো ঠিক রাখা কঠিন হয়ে যাবে।