গত শনিবার (৮ জুলাই) পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ভোটের উৎসবে গণতন্ত্রের রক্তের হোলি দেখতে হয়েছে পশ্চিমবঙ্গবাসীকে। ব্যাপক সহিংসতার মধ্য দিয়েই রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হয়েছে। সহিংসতা, গুলি, বোমা, হত্যা কি না হয়েছে এই নির্বাচনে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৯ জনের। এর মধ্যে শুধু ভোটের দিনই প্রাণ হারিয়েছে ১১ জন। আহতের সংখ্যাও একাধিক। নিহতদের মধ্যে যেমন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী, সমর্থকরা রয়েছে। তেমনি এক পঞ্চায়েত প্রার্থী এবং ভোটের লাইনে দাঁড়ানো ভোটারও আছেন।
নির্বাচন শেষে বিরোধী দলগুলো রাজ্য নির্বাচন কমিশনে গিয়ে এই নির্বাচনকে লুট, খুন,সহিংসতার নির্বাচন বলে রাজ্যে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে রোববার (৯ জুলাই) সকাল থেকেই আন্দোলন শুরু করে।
তবে নির্বাচনের শেষে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়ে ছিলেন। ওই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে রাজ্যের কোন জেলায় কোন বুথে পুনরায় ভোট হবে তার তালিকা প্রকাশ করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
রাজ্যের ২২টি জেলার মধ্যে ১৯টিতেই পুনর্নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। প্রত্যাশিত ভাবেই হাতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) পশ্চিমবঙ্গের ভোটের ফল ঘোষণা করার কথা। তার আগে সোমবার (১০ জুলাই) রাজ্যের ৬৯৭টি বুথে পুনর্নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হলো।
সবচেয়ে বেশি সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলায়। ওই জেলায় চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া কোচবিহার ও পূর্ব বর্ধমান জেলায় দুজন এবং মালদা, নদীয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় একজন করে প্রাণ হারিয়েছে।
মুর্শিদাবাদেই সবচেয়ে বেশি বুথে আবারও ভোট হতে চলেছে। সোমবার সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নির্দিষ্ট বুথগুলোতে নতুন করে ভোটগ্ৰহণ করা হবে। সোমবার সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারিতে ভোটগ্ৰহন হবে।
রোববার রাতে প্রায় ১৭টি জেলার তথ্য হাতে আসে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। বাকি ছিল কোচবিহার এবং উত্তর দিনাজপুর। ওই দুই রাজ্যের তথ্য পরে এসেছে। কমিশনের পক্ষ থেকে পুনর্নির্বাচনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে জানানো হয় কালিম্পং, দার্জিলিং ঝারগ্রাম ছাড়া রাজ্যের ২২টি জেলার মধ্যে বাকি ১৯টি জেলার ৬৯৭টি বুথে ভোট গ্ৰহন হবে।
সোমবার (১০ জুলাই) কুচবিহার, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম, বাঁকুড়া, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, হাওড়া, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ফের ভোট হবে।
এই নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সেনাকে চিঠি দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিনি লিখেছেন, পুনর্নির্বাচনে সহিংসতা এড়াতে পদক্ষেপ নিন।