প্রতি বছর কয়েক লাখ শিক্ষার্থী পড়ালেখা শেষ করে বের হচ্ছেন। সে অনুপাতে চাকরির নিয়োগ নেই বললেই চলে। দেশে জনসংখ্যার তুলনায় কর্মসংস্থানের বড়ই অভাব। সরকারি চাকরি যেন সোনার হরিণ। একটি সরকারি বা বেসরকারি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলেই চাকরিপ্রার্থীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। পড়ালেখা শেষ করে চাকরিবাকরি তো করতে হবে। রুটি-রুজির জন্য কর্মজীবনে প্রবেশের বিকল্প নেই। বাবা-মা আশায় বুক বেঁধে থাকেন– সন্তান সংসারের হাল ধরবে। সন্তানও চান বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে। এই বেকার যুবকরা বুকভরে আশা নিয়ে বসে থাকেন শুক্রবার কবে আসবে। শুক্রবার এলেই বা কী? ঘুরেফিরে এক নিয়োগ কয়েক সপ্তাহ চালিয়ে দেয় চাকরির পত্রিকাগুলো।
প্রতি শুক্রবার কয়েকটি সাপ্তাহিক চাকরির পত্রিকা বের হয়। সেখানে সরকারি-বেসরকারি চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া থাকে। অনেক ক্ষেত্রে চাকরির পত্রিকাতে কিছু ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও থাকে। অনেকেই তা বুঝতে পারেন না। এসব ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে লেখা থাকে– আকর্ষণীয় বেতন দেওয়া হবে। কোম্পানি থেকে থাকা-খাওয়া সম্পূর্ণ ফ্রি। নিজ জেলা বা উপজেলায় নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থী এক সপ্তাহের মধ্যে মোবাইল নম্বরসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে অতি দ্রুত আবেদনপত্র পাঠিয়ে দেন। সেই ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির নিচে মোবাইল নম্বরে কল করলে একজন নারী ফোনটি রিসিভ করেন। তিনি অনেক কিছু বলার এক পর্যায়ে আবেদনপত্র পাঠাতে বলেন। বেকার যুবকরা ভাবেন, কোম্পানির চাকরি যদি হয়, তাহলে করতে থাকি। এর চেয়ে ভালো চাকরি হলে অন্য জায়গায় চলে যাব।
যারা আবেদনপত্র পাঠিয়েছিলেন, তাদের মোবাইলে খুদে বার্তা দিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য বলা হয়। অনেকেই সেই লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পরীক্ষার এক সপ্তাহ পর মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। নিয়োগ কর্তৃপক্ষ বলে থাকে– কিছু টাকা জামানত লাগবে। জামানত দিলে আপনাকে আমরা এক সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগ দিয়ে দেব। অনেকেই জামানতের টাকা দেন। এর পর অফিসের লোকজন উধাও। মানে অফিসের জায়গায় অফিস ঠিকই আছে; লোকজন নেই। অফিস তালাবদ্ধ। এভাবে এক শ্রেণির মানুষ লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বেকার যুবকদের কাছ থেকে। এতে চাকরিপ্রত্যাশীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এসব ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর হতে হবে।