রাশিয়ার ১২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেন যুদ্ধে সহায়তা করে, এমন ইলেকট্রনিকস ও অন্যান্য পণ্য যাতে মস্কো না পায়, সে জন্য এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মার্কিন অর্থ ও পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে। খবর সিএনএন, আল-জাজিরা ও বিবিসির।
ধাতব ও খনি খাতে রাশিয়ার রাজস্ব আয় কমাতে, ভবিষ্যৎ জ্বালানি সক্ষমতাকে দুর্বল করতে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যব্যবস্থায় যেন তারা ঢুকতে না পারে, সেসব বিষয়ও মাথায় রেখে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানায় মার্কিন অর্থ দপ্তর। এ দপ্তরের উপমন্ত্রী ওয়ালি অ্যাডিইয়েমো বলেন, রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতা ও যুদ্ধক্ষেত্রে সমরাস্ত্র সরবরাহ রুখে দিতে এবং অর্থনৈতিক ভিত্তিকে দুর্বল করে দেওয়ার লক্ষ্যে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা শত শত কোটি ডলারের যুদ্ধাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে কিয়েভকে সহায়তা করছে। রাশিয়া বলছে, পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়াকে ধ্বংস করে দিতে চায়। তবে পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করে উল্টো অভিযোগ করছে, বিনা উসকানিতে ইউক্রেনের ভূখণ্ড দখল করেছে রাশিয়া।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার দুই নাগরিক রয়েছেন। এসব ব্যক্তি ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের সঙ্গে জড়িত। এর বাইরে আরেক ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ও ক্রেমলিনের মালিকানাধীন জ্বালানি কোম্পানি গাজপ্রম–নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান ও কারখানা রয়েছে।
রাশিয়ার ছয়জন উপমন্ত্রী, এফএসবি নিরাপত্তা সংস্থার একজন উপপরিচালক এবং স্মোলেনস্ক অঞ্চলের গভর্নর এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ওই সব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন সম্পদ, তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সম্পদ জব্দ করা হবে। এ ছাড়া মার্কিন কোনো নাগরিক বা এই দেশে বসবাসরত কোনো ব্যক্তির সঙ্গে তাদের লেনদেন করার সুযোগ থাকবে না।
অর্থ দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস প্রতিষ্ঠানের অস্ত্র ও সরঞ্জাম ব্যবহার করছে, যা ইতিমধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কিরগিজস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সার্বিয়াভিত্তিক কোম্পানিও রয়েছে। অর্থ দপ্তর আরও জানায়, কিরগিজস্তানভিত্তিক এলএলসি আরএম ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সামরিক ও বেসামরিক সরঞ্জামাদি সরবরাহ করেছে রাশিয়াকে।
নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রাশিয়ার এক ডজন প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা বিদেশি প্রযুক্তি আমদানি করে এবং প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা অস্ত্র উৎপাদন ও প্রতিরক্ষা গবেষণার সঙ্গে যুক্ত।