জঙ্গি সংগঠন ‘জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’কে নিষিদ্ধ করেছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারের কাছে প্রতীয়মান হয় যে, জামায়াতুল আনসার নামের জঙ্গি সংগঠনটির কার্যক্রম দেশের শান্তিশৃঙ্খলা পরিপন্থী। সংগঠনটির কার্যক্রম জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হওয়ায় বাংলাদেশে এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।
গত বছরের ২৩ আগস্ট কুমিল্লা থেকে আট কলেজছাত্র নিখোঁজ হওয়ার পর আলোচনায় আসে জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া। এর আগে প্রায় চার বছর ধরে গোপনে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন সংগঠনের সদস্যরা। নতুন সদস্য সংগ্রহ করে চরাঞ্চল ও পাহাড়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন তারা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাষ্যমতে, এ সংগঠনের লক্ষ্য ছিল দেশে সশস্ত্র হামলা চালানো।
নিখোঁজ তরুণদের খোঁজ করতে গিয়ে পুলিশ ও র্যাব জানতে পারে, তাদের জঙ্গিবাদে জড়িয়ে ‘হিজরতের’ নামে ঘরছাড়া করা হয়েছে। র্যাব জানায়, অর্থের বিনিময়ে বান্দরবানের কয়েকটি পাহাড়ে এই সংগঠনের সদস্যদের প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেয় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ (কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট)।
জামায়াতুল আনসারের আমির আনিসুর রহমানসহ তিনজনকে গত ২৪ জুলাই মুন্সিগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গত ২৩ জুন রাতে রাজধানীর ডেমরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সংগঠনটির আরেক নেতা শামিন মাহফুজকে স্ত্রীসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, শামিন মাহফুজ এই জঙ্গি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা।
গত অক্টোবরে দেশের বিভিন্ন স্থানে ও পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার বিভিন্ন পর্যায়ের অর্ধশতাধিক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
র্যাব জানিয়েছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের আমির আনিসুর রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাসহ মোট ৮২ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এ ছাড়া পাহাড়ে অবস্থান, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কার্যক্রমে জামায়াতুল আনসারের জঙ্গিদের সহায়তার জন্য পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কেএনএফ’–এর ১৭ জন নেতা ও সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।