রাজধানীর হাতিরঝিলে পানির মধ্যে গড়ে তোলা কয়েক শ ফুট উঁচু একটি বিদ্যুতের টাওয়ারের মাথায় উঠে পড়েছিলেন এক নারী। উচ্চ ভোল্টেজের বিদ্যুৎ পরিবাহী বেশ কয়েকটি তার গেছে ওই টাওয়ার দিয়ে। বিদ্যুতের ওই সব লাইন গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় সেগুলো বন্ধ করারও উপায় ছিল না।
এ পরিস্থিতিতে ওই নারীকে নিয়ে বেকায়দায় পড়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। ঘণ্টা তিনেক অনুনয়–বিনয়ের পর ওই নারী নিজেই টাওয়ার থেকে নিচে নামেন। পরে তাকে নৌকায় করে হাতিরঝিলের মাঝখান থেকে পাড়ে আনা হয়। ওই নারীর নাম খুকুমনি (৫৫)। তার বাড়ি মুন্সিগঞ্জে। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
এ ঘটনার শুরু আজ শুক্রবার দুপুরে, আর শেষ হয়েছে সন্ধ্যার আগে। হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন বলেন, বেলা আড়াইটার দিকে স্থানীয় লোকজন থানায় ফোন করে ঘটনাটি জানান। খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে রওনা হন। তার আগে বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকে জানান।
বিদ্যুতের টাওয়ারটি মধুবাগ সেতুর পাশে হাতিরঝিলের মাঝখানে। তাই পুলিশের সদস্যরা একটি নৌকা নিয়ে সেখানে পৌঁছান। এরপর হ্যান্ডমাইক দিয়ে ওই নারীকে নিচে নেমে আসার অনুরোধ করেন তারা।
আওলাদ হোসেন বলেন, ওই নারী হাতিরঝিলে গোসল করতে নেমেছিলেন। একপর্যায়ে সাঁতরে টাওয়ারে গিয়ে ওঠেন। এরপর বেয়ে বেয়ে টাওয়ারের ওপরে ওঠেন। পুলিশ নিচে নেমে আসতে বললে ওই নারী বলেন, তিনি নিজের ইচ্ছায় ওপরে উঠেছেন। তার যেখানে খুশি সেখানে যাবেন।
বিদ্যুতের টাওয়ারটি দিয়ে উচ্চ ভোল্টেজের বিদ্যুতের তার যাওয়ায় সেটিতে ওঠা যাচ্ছিল না জানিয়ে ওসি বলেন, সে কারণে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীদের খবর দেওয়া হয়। তারা জানান, এটি গুরুত্বপূর্ণ লাইন হওয়ায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ করা সম্ভব নয়।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ওই নারীকে নিচে নেমে আসতে অনুরোধ করতে থাকেন। শেষমেশ মন গলে ওই নারীর। তিনি নিজেই আস্তে আস্তে নিচে নেমে আসেন। পরে নৌকায় করে তাকে ডাঙায় নিয়ে আসা হয়। তিনি এখন হাতিরঝিল থানা–পুলিশের হেফাজতে আছেন।
হাতিরঝিল থানার ওসি বলেন, ওই নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তার বাড়ি মুন্সিগঞ্জে। তার বাবা মৃত আলালউদ্দিন। আর স্বামীর নাম আইয়ুব আলী। এ ছাড়া আর কোনো তথ্য জানাতে পারেননি তিনি। তার ঠিকানা খুঁজে বের করতে মুন্সিগঞ্জ থানা–পুলিশকে জানানো হয়েছে।