মিয়ানমারের সামরিক সরকারের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা আরও বাড়িয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়েছে। নতুন নিষেধাজ্ঞায় দেশটির যুদ্ধ বিমানের জ্বালানি (জেট ফুয়েল) ক্রয়ের সঙ্গে জড়িত বা এতে সহায়তা দানকারী বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বেসামরিক জনগণের ওপর সেনাবাহিনীর বিমান হামলার কথা উল্লেখ করে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
২০২০ সালের নভেম্বরে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল দেশটির গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন দল। কিন্তু ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে সু চিকে বন্দি করে। এরপর গণতন্ত্রপন্থিদের ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন চালিয়ে আসছে। ধারণা করা হয়, এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি বেসামরিক নিহত হয়েছেন। এসব পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও অপর পশ্চিমা দেশগুলো মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের ওপর একাধিক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, নিষেধাজ্ঞার তালিকায় দুই ব্যক্তিকে রাখা হয়েছে। তারা হলেন খিন পিউ উইন ও ঝাউ মিন তুন। এছাড়া তাদের সম্পর্ক থাকা তিনটি কোম্পানিও রয়েছে। এই ব্যক্তিবর্গ ও কোম্পানিগুলো মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যুদ্ধবিমানের জ্বালানি ক্রয় ও বিতরণে জড়িত।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্বাক্ষরিত এক নির্বাহী আদেশের পর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসবাদ ও আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি ব্রায়ান নেলসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিধিনিষেধ আরোপের যে ক্ষমতা রয়েছে তা সম্প্রসারণের মাধ্যমে আমরা সামরিক জান্তার শাসন ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বাড়তি খাতকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছি। এর মাধ্যমে আমরা জান্তাকে সেসব সম্পদ থেকে আরও বেশি বঞ্চিত করতে পারবো। যা তারা নিজ দেশের নাগরিকদের দমনে ব্যবহার করছে।
মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তারা নিষেধাজ্ঞার প্রভাবকে বড় করে দেখছেন না। তার বলছেন, তারা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালন করছেন।
এর আগে চলতি বছর জুন মাসে মিয়ানমারের দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এই দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে মিয়ানমার অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠান বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় করতো। সামরিক জান্তার বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের ওপর বাধা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে ওয়াশিংটন।