সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে গত ছয় বছরে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করে বিএনপি। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো রোহিঙ্গাদের জন্য যে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে, তা শরণার্থীরা আদৌ পাচ্ছেন কি না, সে বিষয়ে ‘সন্দেহ’ প্রকাশ করেছে দলটি। শুক্রবার সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই সন্দেহের কথা বলেন। মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যার ষষ্ঠ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন অঞ্চলের মংডু, বুচিডং ও রাসেথং জেলার রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচার হত্যা ও নির্যাতন শুরু করে। তখন সীমান্ত অতিক্রম করে সাড়ে সাত লাখের মতো রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। এই ছয় বছরে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংগঠন রোহিঙ্গাদের জন্য প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা অর্থ সহায়তা দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠন মিলে দিয়েছে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলার। এই বিপুল পরিমাণ অর্থের একটি বড় অংশ আওয়ামী লীগ সরকার নানা প্রকল্প ও খাতে সরাসরি খরচ করছে বলে দাবি করেন রিজভী। তিনি বলেন, লাগামহীন দুর্নীতিতে নিমজ্জিত রাষ্ট্রব্যবস্থায় এসব বৈদেশিক সহায়তার কতটুকু সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বা অস্বচ্ছ ও জবাবদিহিহীন প্রক্রিয়ায় খরচ হওয়া সেই অর্থ আদৌ রোহিঙ্গারা পাচ্ছেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।
সরকার রোহিঙ্গাদের মৌলিক অধিকার হরণ করছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, সরকার যে অস্বাস্থ্যকর, অনিরাপদ ও অবর্ণনীয় পরিবেশে শরণার্থীদের রাখছে, তা অত্যন্ত পীড়াদায়ক। সেখানে শিক্ষা বা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। স্বনির্ভরতা বা কর্মব্যবস্থার সুযোগ নেই। মানবিক মর্যাদা বা সামাজিক সুবিচার নেই। স্বভাবতই তাদের জীবনে অস্থিরতা, অস্থিতিশীলতা ও অচলাবস্থা বিরাজ করছে।