শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১৭১ বিশিষ্ট নাগরিক, বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী। বিবৃতিতে বিশিষ্টজন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিভিন্ন দেশের নোবেল পুরস্কারজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের সদস্যের লেখা খোলা চিঠি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর স্পষ্ট হুমকি।
আজ শুক্রবার তাদের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তাঁরা এই প্রতিবাদ জানান। তাঁরা বলেন, খোলা চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কিছু আইনি ও নৈতিক প্রশ্ন সামনে চলে আসে।
বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৪(৪) অনুযায়ী, বিচারকরা তাদের বিচারিক কাজে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন। সংবিধান অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্র পরিচালনায় যুক্ত কারোরই বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার কোনো এখতিয়ার নেই। ওই চিঠির বক্তব্য বাংলাদেশের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা স্বীকৃত শ্রমিকদের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। এই চিঠিতে ‘নিরপেক্ষ’ বিচারকের মাধ্যমে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বিচারের যে আহ্বান জানানো হয়েছে, তা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে হেয় প্রতিপন্ন করার শামিল।
বিবৃতিতে তাঁরা ড. ইউনূসকে ‘বিচারিক হেনস্তার’ অভিযোগ অমূলক ও অনভিপ্রেত হিসেবে আখ্যা দেন। একই সঙ্গে খোলা চিঠিতে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিরা নিজ নিজ দেশের মতো বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকেও সম্মান করার আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে অন্যদের মধ্যে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক শিল্পী হাশেম খান, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক ও ইতিহাসবিদ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন, বাংলা একাডেমির সভাপতি, কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন, নাট্যব্যক্তিত্ব ম. হামিদ, রামেন্দু মজুমদার, কবি নির্মলেন্দু গুণ, সাংবাদিক শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবু, আবেদ খান প্রমুখ।
এদিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস-সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রী বরাবর নোবেল বিজয়ী ও অন্যদের পাঠানো খোলা চিঠি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। আজ সমিতির সভাপতি মোমতাজউদ্দিন ফকির এবং সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়। এতে তাঁরা বলেন, তাদের এই চিঠি অসত্য তথ্যনির্ভর। তারা প্রকৃত সত্য জানলে এই চিঠি দিতেন না।