সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রবল বৃষ্টিপাতের মুখে পড়েছে এশিয়ার অন্যতম অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র হংকং। ভারী এই বৃষ্টির জেরে প্লাবিত হয়েছে ঘনবসতিপূর্ণ এই শহরের বিভিন্ন রাস্তা, শপিং মল ও মেট্রো স্টেশন।
এমনকি বৃষ্টিপাতের রেকর্ড ভেঙেছে ১৪০ বছরের ইতিহাস। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুষলধারে বৃষ্টির পর হংকংয়ের বহু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এমনকি বৃষ্টির জেরে রাস্তা, শপিং মল এবং মেট্রো স্টেশনজুড়ে ব্যাপক রন্যা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় হংকং কর্তৃপক্ষ স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে এবং কর্মীদের বাড়িতে থাকতে বলেছে।
রয়টার্স বলছে, ১৪০ বছর আগে রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে চীনের এই বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। শহরের পাহাড়ি এলাকায় পানির ব্যাপক স্রোত দেখা দিয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ ভূমিধসের ঝুঁকির সতর্কতা জারি করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত বেশ কিছু ভিডিওতে মুষলধারে বৃষ্টির পর শহরের রাস্তাগুলো কার্যত জলস্রোতে পরিণত হতে দেখা গেছে। অন্য একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা গেছে, মেট্রো কর্মীরা একটি স্টেশনের নিচে রাস্তার স্তর থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহকে থামানোর চেষ্টা করছেন।
হংকং শহরের ক্রস হারবার টানেলও পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া শহরের চা ওয়ান এলাকায় জলাবদ্ধ শপিং সেন্টারের ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। হংকং অবজারভেটরি স্থানীয় সময় রাত ১১ টা থেকে শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত শহরে ১৫৮.১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের কথা জানিয়েছে।
এছাড়া আবহাওয়া ব্যুরো ভারী ঝড়-বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে এবং বলেছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে হংকংয়ের প্রধান দ্বীপ কাউলুন এবং শহরের উত্তর-পূর্ব অংশে ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
রয়টার্স বলছে, গত সপ্তাহে আছড়ে পড়া টাইফুন হাইকুইয়ের অবশিষ্টাংশের সাথে যুক্ত নিম্নচাপের কারণে বৃহস্পতিবার থেকে চীনের গুয়াংডং উপকূলে মুষলধারে বৃষ্টিপাত হচ্ছে বলে আবহাওয়া ব্যুরো জানিয়েছে। আবহাওয়ার চরম এই পরিস্থিতি শুক্রবার অন্তত দুপুর পর্যন্ত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই চলমান দুর্যোগ পরিস্থিতিতে হংকংয়ের স্টক এক্সচেঞ্জ শুক্রবার সকালে বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এমনকি দুপুর নাগাদ ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সতর্কতা বহাল থাকলে বিকেলের সেশনেও এক্সচেঞ্জ বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
হংকং শহরের নেতা জন লি বলেছেন, ভূখণ্ডের বেশিরভাগ অংশে ভয়াবহ বন্যার বিষয়ে তিনি খুব উদ্বিগ্ন এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে সমস্ত বিভাগকে ‘জোর প্রচেষ্টা’ দিয়ে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সরকার বলেছে, ‘বিস্তৃত বন্যা এবং যানবাহন চলাচলে গুরুতর ব্যাঘাতের কারণে শুক্রবার সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে।’