শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউজের গোডাউন থেকে সাড়ে ৫৫ কেজি স্বর্ণচুরির ঘটনায় চার কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার কাস্টম কমিশনার একেএম নুরুল হুদা আজাদের স্বাক্ষরে এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি হয়েছে।
বরখাস্ত চার কর্মকর্তা হলেন- সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম সাহেদ, মো. শহীদুল ইসলাম, মাসুম রানা ও আকরাম শেখ।
গত ২ সেপ্টেম্বর কাস্টমস হাউজের নিজস্ব গুদামের ভল্ট থেকে সােড় ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় মামলা হয়। মামলা তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটজনকে ডিবি পুলিশ আটক করে। তাদের মধ্যে চারজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, আর চারজন সিপাহি ছিলেন।
গুদাম পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের কাজ করতে গিয়ে কর্মচারীরা গুদামের ভেতরে স্বর্ণ রাখার ভল্ট ভাঙা দেখতে পেলে স্বর্ণ চুরির বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, এতে কী পরিমাণ স্বর্ণ চুরি হয়েছে তা নিশ্চিত হতে গুদামে থাকা মোট স্বর্ণের হিসাব মেলানোর কাজ চলে। পরবর্তীতে ৫৫.৫১ কেজি স্বর্ণ হারানোর কথা উল্লেখ করে বিমানবন্দর থানায় মামলা হয়।
সাময়িক বরখাস্তের আদেশ বলা হয়েছে, ‘সাইদুল ইসলাম সাহেদ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ট্রানজিট মূল্যবান গুদামে দায়িত্বকালীন সময়ে গুদাম কর্মকর্তা হিসেবে শুল্ক গুদামে প্রবেশের Lock & Key নিয়ন্ত্রণ না করা, অনামে নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ণ রয়েছে কিনা তা মনিটরিংপূর্বক নিয়মিত প্রতিবেদন প্রেরণ না করা, গুদামের মালামাল যথাযথভাবে বুঝিয়ে না দেয়া, ছয়টি ডিএমের বিপরীতে জমা করা স্বর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে না দেয়া এবং অহেতুক সংশয় সৃষ্টি করা, TGR-1 গুদামের মূল্যবান পণ্য VGR গুদামে স্থানান্তর না করা, মূল্যবান পণ্য জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থায়ী জমা/অস্থায়ী ভিত্তিতে জমা না করা এবং জমা না করার বিষয়টি তত্ত্বাবধানকারী/নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তার নিকট গোপন রাখা এবং সর্বোপরি তার হেফাজত থেকে ৫৫.৫১ কেজি স্বর্ণ ঘাটতির ঘটনা তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আদেশ অমান্যকরণের শামিল। যা সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি-২(খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ হিসেবে গণ্য এবং বিধি-৩ নার উপবিধি (খ) অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
‘তাই সাইদুল ইসলাম সাহেদের এমন কার্যকলাপের কারণে সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি-১২ (১) অনুযায়ী তাকে সরকারি চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি বিধি মোতাবেক খোরাকি ভাতা পাবেন। সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালীন সময়ে তিনি কাস্টম হাউসে অফিস চলাকালীন নিয়মিত উপস্থিত থাকবেন এবং ডেপুটি কমিশনার (জনপ্রশাসন) এর নিকট রিপোর্ট করবেন।’
এর আগে ২০১৯ সালে বেনাপোল কাস্টমস হাউজের গুদাম থেকে ২০ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনা ঘটে, যাতে কাস্টমসের কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন বলে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে।