বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ও বর্তমান প্রাসঙ্গিকতা

ড. শামসুল আলম

ড. শামসুল আলম
ড. শামসুল আলম। ফাইল ছবি

জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ঝুঁকির কারণে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকার ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ নামে একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। দেশের কাঙ্ক্ষিত আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অর্জনের লক্ষ্যে কৃষি, মৎস্য, বনায়ন, পানি ব্যবস্থাপনা, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিবেচনায় নিয়ে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ নেদারল্যান্ডস সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ শীর্ষক একটি দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে, যা ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে এনইসি কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল, যা পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। এ মহাপরিকল্পনার রূপকল্প হচ্ছে ‘নিরাপদ, জলবায়ু পরিবর্তনে অভিঘাতসহিষ্ণু সমৃদ্ধশালী বদ্বীপ গড়ে তোলা’।

আর এ রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর লক্ষ্য হচ্ছে ‘দৃঢ়, সমন্বিত ও সময়ের সঙ্গে পরিবর্তনশীল কার্যকরী কৌশল অবলম্বন এবং পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় ন্যায়সংগত সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত এবং অন্যান্য বদ্বীপসংক্রান্ত সমস্যা মোকাবেলা করে দীর্ঘ মেয়াদে পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও পরিবেশগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণ।’ এই মহাপরিকল্পনায় উচ্চতর পর্যায়ের তিনটি জাতীয় অভীষ্ট হচ্ছে—১. ২০৩০ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্য দূরীকরণ; ২. ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন; ৩. ২০৪১ সাল নাগাদ একটি স্মার্ট সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদা অর্জন।
জাতীয় উন্নয়নে পানি, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, পরিবেশ, প্রতিবেশগত ভারসাম্য, কৃষি, ভূমি ব্যবহার ও অভ্যন্তরীণ পানি ব্যবস্থাপনার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো এবং দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ একটি অভিযোজনভিত্তিক, সামগ্রিক এবং দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত অর্থনৈতিক ও কারিগরি মহাপরিকল্পনা। পানিসম্পদের টেকসই ব্যবহার এবং পানির দ্বারা সৃষ্ট প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও নদীভাঙন রোধ বদ্বীপ পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য।

বদ্বীপ পরিকল্পনায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি ব্যবস্থাপনার ওপর অত্যধিক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পানি ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ যেমন দেশব্যাপী বন্যা, নদী এবং মোহনা অঞ্চলের নদীভাঙন ও পলি জমা, উপকূলীয় জলোচ্ছ্বাস ও লবণাক্ততা, হাওরের আকস্মিক পাহাড়ি ঢল এবং জলাভূমি ব্যবস্থাপনা, আন্তর্দেশীয় পানি ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি মোকাবেলায় শতবর্ষী বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-তে ছয়টি অঞ্চলভিত্তিক কিছু কৌশল ও কার্যক্রমের প্রস্তাব করা হয়েছে। অতীতে গৃহীত দেশের খাতভিত্তিক সব কৌশলপত্র, নীতিপত্র এবং খাতভিত্তিক পরিকল্পনাগুলোকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

বদ্বীপ পরিকল্পনার বর্তমান বাস্তবায়ন অবস্থা

বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ সাড়ে চার বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে তৈরি।

৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে এনইসি কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার পর প্রায় পাঁচ বছর অতিবাহিত হলো। এ সময় এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কতটুকু অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে তা আলোকপাত করা হলো :

ডেল্টা উইং স্থাপন

বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়নের সার্বিক সমন্বয়, বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা, পরিকল্পনা হালনাগাদ এবং মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণের জন্য পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এ দায়িত্ব পালনের জন্য এই বিভাগে একটি বিশেষায়িত ‘ডেল্টা উইং’ গঠনের বিষয়ে বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০তে উল্লেখ রয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ২ জানুয়ারি প্রস্তাবিত ডেল্টা উইংয়ের কাঠামোর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। পরিকল্পনা বিভাগ কর্তৃক গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর সুষ্ঠু ও সফল বাস্তবায়নের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন ডেল্টা উইং সাধারণ অর্থনীতি বিভাগে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

ডেল্টা ফান্ড গঠনে পলিসি ব্রিফ প্রণয়ন

বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন নিশ্চিত করার জন্য ‘বাংলাদেশ ডেল্টা ফান্ড’ নামের একটি তহবিল গঠনের উল্লেখ রয়েছে। এ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ডেল্টা ফান্ডের জন্য একটি পলিসি ব্রিফ প্রণয়ন করা হয়েছে। সরকারের বিদ্যমান প্রকল্প বাস্তবায়ন পদ্ধতি বিবেচনায় এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন ফোরামে আলোচনার মাধ্যমে প্রাপ্ত সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ডেল্টা ফান্ড হিসেবে পৃথক একটি ফান্ড গঠন এবং পৃথক অ্যাকাউন্টিং পদ্ধতি অনুসরণের পরিবর্তে এ ফান্ডের জন্য উক্ত পলিসি ব্রিফে এডিপির আওতায় প্রদত্ত প্রকল্পভিত্তিক বরাদ্দ এবং ব্যয় নির্বাহের চলমান পদ্ধতি অনুসরণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সক্ষমতা বৃদ্ধি

বদ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থার কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ‘এসআইবিডিপি ২১০০’ প্রকল্পের আওতায় একটি প্রশিক্ষণ মডিউল প্রণয়ন করা হয়েছে। উক্ত প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত মোট ৩১টি প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করা হয়েছে। এসব প্রশিক্ষণে ডেল্টাসংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থার মোট ৯৬১ জন কর্মকর্তাকে বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ মূল্যায়ন, বাংলাদেশ বদ্বীপ অভিযোজন ব্যবস্থাপনা, অগ্রসর অভিযোজন বদ্বীপ ব্যবস্থাপনা এবং মেটা মডেল ব্যবহার বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

ডেল্টা গভর্ন্যান্স কাউন্সিল গঠন

এ পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য উচ্চ পর্যায়ের একটি ‘ডেল্টা গভর্ন্যান্স কাউন্সিল’ গঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এবং পরিকল্পনামন্ত্রীর সহসভাপতিত্বে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের এই ফোরাম তত্ত্বাবধায়ক ও নির্দেশক সত্তা হিসেবে কাজ করছে। এ ছাড়া এই কমিটি কৌশলগত পরামর্শ ও নীতি-নির্দেশনা প্রদান করবে।

প্রকল্প/প্রগ্রাম বাছাই কমিটি

‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’-এর বিনিয়োগ কর্মসূচির জন্য প্রকল্প/কর্মসূচি যাচাই-বাছাইপূর্বক নির্বাচন এবং পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য সদস্য, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের নেতৃত্বে একটি আন্ত মন্ত্রণালয় প্রকল্প/কর্মসূচি নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা মূলত ডেল্টা পরিকল্পনার জন্য নির্দিষ্ট প্রকল্প ও প্রগ্রামগুলো নির্বাচন এবং পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য কাজ করে চলেছে।

ডেল্টা নলেজ পোর্টাল/তথ্যভাণ্ডার স্থাপন

অভিযোজিত ডেল্টা ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ গ্রহণের একটি অপরিহার্য পূর্বশর্ত হচ্ছে ডেল্টা নলেজ ব্যাংক গড়ে তোলা। বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর আওতায় বাস্তবায়িত, বাস্তবায়নাধীন ও বাস্তবায়িতব্য প্রকল্পগুলো যথাযথ তথ্যের ভিত্তিতে প্রণয়নের জন্য জিইডিতে ডেল্টা নলেজ পোর্টাল নামের একটি ডিজিটাল তথ্যভাণ্ডার স্থাপন করা হয়েছে। ডেল্টা বেইজ লাইন স্টাডিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য এতে আপলোড করা হয়েছে।

প্রথম আন্তর্জাতিক ডেল্টা কনফারেন্স আয়োজন

বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর কৌশল, বাস্তবায়ন, অর্থায়ন, অগ্রাধিকার প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে অবহিতকরণ এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের উদ্দেশ্যে (দেশি ও বিদেশি প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে) জিইডি এবং বাংলাদেশে অবস্থিত নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের উদ্যোগে ঢাকায় গত ২৬-২৭ মে দুই দিনব্যাপী ‘Bangladesh Delta Plan 2100 International Conference: Issues and Challenges of Implementation’শিরোনামে একটি আন্তর্জাতিক কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কনফারেন্স উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ কনফারেন্স আয়োজনে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা প্রভৃতি উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান সার্বিক সহযোগিতা করেছে।

অষ্টম পঞ্চবাষিক পরিকল্পনায় প্রতিফলন

বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর বাস্তবায়নে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর বিনিয়োগ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত ৮০টি প্রকল্পের মধ্যে পানিসম্পদ, খাদ্য নিরাপত্তা, আঞ্চলিক পানি ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতের ৪৭টি প্রকল্প অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মেয়াদে গ্রহণের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়নে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, আঞ্চলিক পানি গ্রুপগুলোকে সক্রিয়করণ প্রভৃতি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য কৌশল প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাংলাদেশ বদ্বীপ বিনিয়োগ পরিকল্পনায় প্রথম পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য মোট ৮০টি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। তন্মধ্যে ৬৫টি ভৌত অবকাঠামোসংক্রান্ত প্রকল্প এবং ১৫টি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও দক্ষতা উন্নয়ন ও গবেষণাবিষয়ক প্রকল্প রয়েছে। এসব প্রকল্পে মোট মূলধন বিনিয়োগ ব্যয় ২৯৭৮ বিলিয়ন টাকা (প্রায় ৩৭ বিলিয়ন ইউএস ডলার)। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিপিতে বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর বিনিয়োগ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত এবং এর কৌশলগত উদ্দেশ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩১৪টি প্রকল্প চিহ্নিত করা রয়েছে। এই ৩১৪টি প্রকল্পের জন্য এডিপিতে মোট বরাদ্দ আছে ৩৭৪৭৫.৪৪ কোটি টাকা, যা এডিপি বরাদ্দের ১৫.২৩ শতাংশ।

কিছু সুপারিশ

এই মহাপরিকল্পনায় জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে ভরাট হয়ে যাওয়া খাল, নদী-নালা খননের সুপারিশ করা হয়েছে। অবৈধভাবে দখলকৃত প্লাবনভূমিতে অপরিকল্পিত নগরায়ণ, নদী বা জলাশয়কে শিল্পাঞ্চলে পরিণত করা ইত্যাদি বিষয়কে বদ্বীপ পরিকল্পনায় অধিকতর গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়েছে।

বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০তে শুষ্ক মৌসুমে পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অন্যতম কৌশল হচ্ছে পানি সংরক্ষণাগার তৈরি এবং বর্ষার পানি ধরে রাখা। এ ছাড়া ভূ-উপরিস্থ পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনায় দেশের অভ্যন্তরে নদী-খাল-বিল ড্রেজিং করে জলাধার নির্মাণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে অনেক নদী-নালা, খাল-বিল রয়েছে, যেগুলোকে জলাধার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। প্রয়োজনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার মাধ্যমে জলাধার নির্মাণের কৌশলগত স্থানগুলো চিহ্নিত করতে হবে। পরে এগুলো সংস্কার-খননপূর্বক গভীরতা বৃদ্ধি করে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে পানি সংরক্ষণ করে শুষ্ক মৌসুমে সেচকাজ ও মৎস্য চাষে ব্যবহার করা যেতে পারে।

বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ একটি সমন্বিত ও সর্বজনীন মহাপরিকল্পনা। এই মহাপরিকল্পনা হচ্ছে ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বর্তমান প্রজন্মের শ্রেষ্ঠ উপহার’। এই স্লোগান বাস্তবায়নের জন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের যারা আসবে তাদের শতবর্ষী এই মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে সর্বতোভাবে জানাতে হবে। আর এটি জানতে হলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় পাঠ্যপুস্তকে তা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, বিশেষ করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা স্তরে বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। তা ছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লব্ধ ডেল্টা সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক জ্ঞান সংকলন করে একটি ডিজিটাল নলেজ লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে।

বদ্বীপ পরিকল্পনা গ্রহণের পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। সময় পরিবর্তনের বিবেচনায় বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর অনেক বিষয় পরিবর্তন ও নতুন কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। সে বিবেচনায় পরিকল্পনাটি সংশোধন, পরিবর্তন ও পরিমার্জন করা প্রয়োজন বলে মনে করি এবং এতদবিষয়ে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগকে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।

লেখক : অর্থনীতিবিদ ও প্রতিমন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়

শেয়ার করুন