ছয় বছর আগে শেষ হয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী এলাকায় ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের বহুতল ভবন নির্মাণ। তবে এখনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। ফটক, বারান্দা ও ভবনের আঙিনা চলে গেছে নার্সারি ব্যবসায়ীদের দখলে।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, বরমী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের উত্তর পাশে তিনতলাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের ভবন। এর ফটকে সরু একটি গলি রেখে দুই পাশে বিভিন্ন গাছের চারা রাখা। ফটকের ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের মূল ভবনের প্রবেশপথ ও বারান্দা থেকে শুরু করে আশপাশে বিপুলসংখ্যক গাছের চারা রাখা। ভবনের ভেতর প্রবেশ করে নিচতলায় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মীদের দেখা গেছে। তারা সীমিত পরিসরে চিকিৎসা দিচ্ছেন। ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলা পড়ে আছে।
মা ও শিশু মৃত্যু কমিয়ে আনতে স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক প্রান্তিক পর্যায়ে ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণের অংশ হিসেবে শ্রীপুরের বরমী এলাকায় তিনতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হয়। এতে মা ও শিশুর জন্য আলাদা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ, অস্ত্রোপচারের জন্য অপারেশন থিয়েটার ও ল্যাব স্থাপন করার কথা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১৬ সালে। কিন্তু সেখানে শয্যা, যন্ত্রপাতি ও আনুষাঙ্গিক উপকরণ দেওয়া হয়নি। চিকিৎসকের দুটি পদ থাকলেও ছয় বছরে তা পূরণ করা হয়নি। শূন্য পড়ে আছে নার্সের চারটি পদ। এ ছাড়া পরিদর্শকে তিনটি, পরিচ্ছন্নতাকর্মীর তিনটি পদও শূন্য।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভবন নির্মাণের পর দীর্ঘদিন ধরে সেটি তালাবদ্ধ ছিল। ২০২১ সালে অব্যবহৃত পড়ে থাকা ওই ভবনে সীমিত পরিসরে সেবা দেওয়া শুরু করে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। সেখানে একজন পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা দেওয়া হয়। তিনি ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে বসে সাধারণ রোগীদের সেবা দেন। তিনি বলেন, চিকিৎসক ও অন্যান্য পদে লোকবল নিয়োগ দিলেই কার্যক্রম শুরু করা যাবে। ঊর্ধ্বতন ও কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়মিতই এসব বিষয়ে জানানো হয়; কিন্তু লোকবল দেওয়া হয় না।
চিকিৎসক ও অন্যান্য পদে লোকজন না থাকায় মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রটিতে মূল কার্যক্রম কবে নাগাদ শুরু হবে, তা বলতে পারছেন না কেউই। এই সুযোগে ভবনের ফটক ও আশপাশে নার্সারি স্থাপন করে ব্যবসা করছেন বরমী ইউনিয়নের সোহাদিয়া গ্রামের মাসুদ ভুঁইয়া নামের এক ব্যক্তি।
জানতে চাইলে শ্রীপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লোকবল নিয়োগ করে ওই কেন্দ্রটি চালু করার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।