রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতার ফল ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ। মঙ্গলবার ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-সুদানির সঙ্গে মস্কোতে বৈঠকে এ কথা বলেছেন তিনি। এ সময় মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘদিনের এই সংঘাতের সমাধানে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা জরুরি বলেও মন্তব্য করেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলাপকালে প্রথমবারের মতো হামাস-ইসরায়েল চলমান যুদ্ধ নিয়ে মন্তব্য করেন ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, অনেকেই আমার সাথে একমত হবেন যে, হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নীতির ব্যর্থতার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই সংকটকে একচেটিয়াভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত উভয়পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এমন সমঝোতার জন্য তারা কিছুই করতে পারেনি। বিপরীতে এর সমাধানে তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছে। উভয়পক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে।
পুতিন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘ফিলিস্তিনি জনগণের অত্যাবশ্যক স্বার্থ বিবেচনায় নিতে’ ব্যর্থ হয়েছে। একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবকে উপেক্ষা করেছে।
এর আগে, সোমবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ হামাস-ইসরায়েল সংঘাতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের আলোচনাই এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র উপায়। ল্যাভরভের বরাত দিয়ে রুশ সংবাদমাধ্যম তাস জানায়, যে কারণে কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধান করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে, সেদিকেই বিশেষ মনোযোগ দেওয়া দরকার।
এর আগে, একই দিনে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক বিস্তৃত সংঘাতে পরিণত হতে পারে। আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
‘মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের চারপাশে যা ঘটছে তা আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে প্রত্যক্ষ করছি। এই পরিস্থিতি আশপাশে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে পরিপূর্ণ। যে কারণে এটি আজ আমাদের বিশেষ উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
এদিকে, ইসরায়েলের সাথে চলমান যুদ্ধের মাঝেই ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস মস্কো সফরে যাচ্ছেন বলে মঙ্গলবার রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।
মস্কোতে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত আবদেল হাফিজ নোফালের বরাত দিয়ে রাশিয়ার আরবিসি নিউজ আউটলেট বলেছে, ‘এই সফর কখন হবে, সে বিষয়ে আমরা রাশিয়ার পক্ষ থেকে ক্রেমলিনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতির অপেক্ষায় রয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস মস্কোতে আসবেন, এ বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছে।’ পৃথকভাবে, মস্কোতে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি এই রাষ্ট্রদূত রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, উভয়পক্ষ নিজেদের মধ্যে ‘দৈনিক যোগাযোগ’ রাখছে।
সূত্র: এপি, রয়টার্স।