প্রতিমায় তুলির শেষ আঁচড়, পুরান ঢাকার অলিগলিতে পূজার আমেজ

মত ও পথ ডেস্ক

সংগৃহীত ছবি

আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে দুর্গাপূজা। পূজার প্রধান উপলক্ষ প্রতিমা তৈরির কাজও প্রায় শেষ। তুলির শেষ আঁচড়ে দেবী দুর্গাকে সাজিয়ে দিচ্ছেন শিল্পীরা। পাশাপাশি প্রতিমার শাড়ি, মুকুট, শাঁখা সিঁদুর লাগানো হচ্ছে। কাল থেকে মন্দিরে মন্দিরে পৌঁছে যাবে প্রতিমা। পূজা উপলক্ষে পুরান ঢাকার অলিগলিতে চলছে মন্দিরের প্যান্ডেল বানানোর কাজ।

সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর শাঁখারিবাজার, লক্ষ্মীবাজার, বাংলাবাজার, শিংটোলা, প্যারিদাস রোডের বিভিন্ন পয়েন্ট চলছে পূজা উদযাপন প্রস্তুতি। বাঁশ দিয়ে বানানো হচ্ছে প্রতিমা রাখার স্টেজ। লাইটিং করা হচ্ছে এক গলি থেকে অন্য গলি পর্যন্ত।

অন্যদিকে পূজার একদিন আগে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরাও। সরেজমিন গিয়ে দেখে গেছে, প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ। প্রতিমা শিল্পীরা দেবী দুর্গা, বরুন স্বরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মীর গায়ে শেষ আঁচড় দিচ্ছেন। মনের মাধুরি মিশিয়ে সাজানো শেষে শাড়ি জড়িয়ে দিচ্ছেন প্রতিমার গায়ে। শাখা, সিঁদুর, মুকুট পরিয়ে পরিপূর্ণ রুপ দিচ্ছেন তারা।

বাংলাবাজার জমিদার বাড়ির প্রতিমা শিল্পী বলাই পাল বলেন, কাজ শেষেই আমাদের তৃপ্তি। রথ যাত্রার পর থেকে দিন-রাত এক করে কাজ করেছি। এ বছর ১২টি কাজের অর্ডার পেয়েছি। সবগুলো আজ-কালের মধ্যে পৌঁছে যাবে। এরমধ্যে রংপুর কালি মন্দিরের আরও একটি কাজ করেছি। খরচ বেড়ে যাওয়ায় লাভ কম হচ্ছে। কারিগরদের বেতন দিয়ে তাদের কাল বিদায় দেবো।

শাঁখারিবাজারের পল্টন পাল বলেন, ৩টি প্রতিমা সেটের কাজ শেষ। এখন প্রতিমার মাথায় চুল লাগাচ্ছি। কালকের মধ্যেই মন্দিরে পৌঁছে যাবে। দূর্গাপূজার পর কালি পূজার জন্য একটি কাজ বাকী আছে সেটিও শেষ করব।

অন্যদিকে শাঁখারিবাজারের এক গলিতে এবার ১১টি মণ্ডপে চলবে পূজা উদযাপন। উৎসব বিরাজ করছে দোকানিদের মধ্যে। প্যান্ডেল বানানোর কাজ চলছে। বেচাকেনাও চলছে সমানতালে। শাখা সিঁদুর কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন নারীরা। প্রতিমা সাজানোর জন্য শেষ মুহুর্তে শাখা, শাড়ি, মুকুট,বেচাকেনা চলছে।

শাঁখারিবাজারের নববানী পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রঞ্জিত নন্দী বলেন, পূজা উদযাপনের সব কার্যক্রম শেষ। দর্গাপূজা উদযাপন একটু ব্যয়বহুল। টাকা কালেকশনে খুবই ব্যস্ততা ছিল। কাল প্রতিমা চলে আসবে। এ বছর নিরাপত্তার জন্য কোতোয়ালি থানা পুলিশ সার্বক্ষণিক থাকবে।

হেমেন্দ্র দাস রোড পূজা উদযাপন কমিটির তরুণ সদস্য শুভজিৎ ঘোষ বলেন, পূজার এক সপ্তাহ আগে থেকে আমাদের আমেজ শুরু। বন্ধুরা মিলে একসঙ্গে শপিং করেছি। একসঙ্গে পূজা উদযাপন অন্য রকম আনন্দ। বাংলা বাজারে আমাদের মণ্ডপের প্রতিমা বানানো হচ্ছে, সবাই মিলে গিয়ে নিয়ে আসবো। এটি অন্যরকম আনন্দের বিষয়।

পুরান ঢাকার দুর্গাপূজা চলাকালীন নিরাপত্তা বিষয়ে কোতয়ালি জোনের এডিসি বদরুল হাসান বলেন, প্রতিমা তৈরির শুরু থেকে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। আজ থেকে পুরান ঢাকার প্রতিটি স্পটে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরান ঢাকার প্রতিটি পূজার মণ্ডপে আমাদের টিম থাকবে। তারা সার্বক্ষণিক পাহারা দেবে। আমাদের সিনিয়র অফিসাররা সবসময় মনিটরিং করবে।

জানা গেছে, আগামীকাল শুক্রবার ষষ্ঠী তিথিতে শুরু হবে এ পূজা এবং মঙ্গলবার দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে অনুষ্ঠান।

শেয়ার করুন