বঙ্গবন্ধু টানেল নিয়ে প্রত্যাশা

মাহমুদুল হক আনসারী

সংগৃহীত ছবি

বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেল উদ্বোধন হবে আগামী ২৮ অক্টোবর। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া সংবাদে আজ পর্যন্ত এই তারিখ নির্ধারিত আছে। বাংলাদেশের উন্নয়নের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই টানেল উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানকে নানাভাবে সফল, সার্থক ও জাঁকজমকপূর্ণ একটি ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান সফল করার জন্য চট্টগ্রাম জেলার সরকারি দপ্তরগুলো ব্যাপকভাবে তৎপর রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নিরবচ্ছিন্নভাবে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কাজ করছে। সব ধরনের সেবা সংস্থা ওই অনুষ্ঠানকে সফল ও সার্থক করার জন্য কাজ করছে। চট্টগ্রামের অলিগলিতে, মার্কেট, বাজার আদালত পাড়ায় এখন একটি শুধু কথা- বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে এই টানেলকে নিয়ে আনন্দ উল্লাস দেখতে পাচ্ছি।

আনোয়ারা পটিয়া কর্ণফুলী এলাকার মধ্যেই এই টানেলটি। এই এলাকাটি টানেলের কাছাকাছি। টানেল ব্যবহারের জন্য এই এলাকাটি ব্যবহার হবে। এরপর টানেলের গাড়িগুলো বিভিন্ন উপজেলায়, হাইওয়ে রোডে প্রবেশ করবে। বাঁশখালী উপজেলাটি এখন দক্ষিণ চট্টগ্রামের জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। এই উপজেলা হয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া মহেশখালী বদরখালীর হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। শত শত প্রাইভেট ও গণপরিবহন দিনরাত চলাচল করছে। বিভিন্ন কোম্পানির গণপরিবহনের বড় বড় এসি গাড়ি বাঁশখালী উপজেলা হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত যাচ্ছে। ফলে ওই রাস্তায় অহরহ সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে। সড়কটি সেই পুরনো আমলের সড়কেই রয়েছে। কয়েক ডজন বাজার সড়কের ওপর। গরু-ছাগলের বাজার অনেক জায়গায় রাস্তাকে গ্রাস করে রেখেছে। সড়কটি ফোর লাইন করার পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়েছে কিনা জানা নেই। স্থানীয় জনগণ সড়কটি বড় করার দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। স্থানীয় এমপি এই বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেছেন কি না আমার জানা নেই। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করবেন, সেহেতু স্থানীয় জনগণ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বাঁশখালী সড়কটির বড় করার ঘোষণা শুনতে চায়।

বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার উন্নয়নের মতো চট্টগ্রামের অবকাঠামো উন্নয়নে এই অঞ্চলের চেহারা পাল্টে গেছে। ফলে এই অঞ্চলের জনগণ সরকারের প্রতি আন্তরিক ও সন্তুষ্ট। প্রধানমন্ত্রী যতবারই চট্টগ্রামে এসেছেন ততবারই তিনি বক্তব্যে চট্টগ্রামের প্রতি বিশেষভাবে আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। ফলে চট্টগ্রামের সাধারণ জনগণ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি খুবই খুশি। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি সাড়ে ৯৮ শতাংশ। ইতোমধ্যে টানেলের পূর্তকাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক (ইলেকট্রো মেকানিক্যাল) কাজ চলছে। টানেল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। নগরের পতেঙ্গা ও আনোয়ারা উপজেলা প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়ক রয়েছে। এর কাজ শেষ হয়েছে। চট্টগ্রামবাসীর অপেক্ষা প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেল উদ্বোধনের মাধ্যমে চট্টগ্রামকে বাস্তবে বাণিজ্যিক রাজধানীর ঐতিহাসিক একটি পদক্ষেপ পূরণ করতে যাচ্ছেন। এই টানেলের মাধ্যমে সারাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে সফলতা প্রতিষ্ঠিত হবে। তাই চট্টগ্রামের মানুষ টানেলের প্রাপ্তিতে আনন্দ ও খুশিতে আত্মহারা।

লেখক : সংগঠক ও গবেষক

শেয়ার করুন