মহাঅষ্টমীতে মহা আয়োজনে হলো কুমারী পূজা

নিজস্ব প্রতিবেদক

শারদীয় দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীতে আজ রোববার সকাল থেকেই ভক্ত ও অনুসারীদের আগমনে মুখরিত মন্দির-মণ্ডপ। রাজধানীর রামকৃষ্ণ মঠে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হলো বিপুল আয়োজনের মধ্য দিয়ে। সকাল ৬টা ১০ মিনিটে মহাঅষ্টমী পূজা শুরু হয়। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে হয় পুষ্পাঞ্জলি। বেলা ১১টায় শুরু হয় কুমারী পূজা।

অগ্নি, জল, বস্ত্র, পুষ্প ও বাতাস—এই পাঁচ উপকরণে দেওয়া হয় ‘কুমারী’ মায়ের পূজা। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে চলে এই পূজা। অর্ঘ্য প্রদানের পর দেবীর গলায় পরানো হয়েছে পুষ্পমাল্য। পুষ্পাঞ্জলি এবং প্রসাদ বিতরণ হয়।

পূজার কার্যক্রম শেষে কুমারী মায়ের নাম জানান রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের অধ্যক্ষ স্বামী পূ্র্ণাত্মানন্দ মহারাজ। তিনি বলেন, এ বছর কুমারী মা হয়েছেন শতাক্ষী গোস্বামী। তাঁর বাবার নাম শ্যামল গোস্বামী, মা রীতা গোস্বামী। রাজধানীর নবেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্লে গ্রুপের শিক্ষার্থী শতাক্ষী গোস্বামী। তার জন্ম ২০১৮ সালে।

স্বামী পূ্র্ণাত্মানন্দ মহারাজ বলেন, কুমারী-প্রতীকে মাতৃরূপে অবস্থিতা সর্বব্যাপী ঈশ্বরেরই মাতৃভাবের আরাধনা। কুমারীতে সমগ্র মাতৃজাতির শ্রেষ্ঠ শক্তি-পবিত্রতা, সৃজনী ও পালনী শক্তি, সব কল্যাণী শক্তি সূক্ষ্মরূপে বিরাজিতা। তাই কুমারী পূজা। তিনি বলেন, ১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার বেলুড় মঠে কুমারী পূজা শুরু করেছিলেন।

তখন থেকে প্রতিবছর দুর্গাপূজার অষ্টমী তিথিতে এই পূজা চলে আসছে। কুমারী পূজা দেখতে সকাল থেকেই রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠে ভিড় করেছেন হাজার হাজার পুণ্যার্থী। দীর্ঘলাইন ধরে প্রবেশ করতে হয়েছে এখানে। রয়েছে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা। দুর্গাভক্তরা কুমারী মাকে আরাধনায় মণ্ডপের সামনে উলুধ্বনি দিয়েছেন। ঢাকের বাদ্য, শাঁখের ধ্বনিতে পুরো মঠ, মিশন এলাকায় ছড়িয়ে গিয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজ।

সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, মহালয়ার দিন ‘কন্যারূপে’ ধরায় আসেন দশভূজা দেবী দুর্গা, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তাঁকে এক বছরের জন্য বিদায় জানানো হয়। তার এই ‘আগমন ও প্রস্থানের’ মাঝে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি পর্যন্ত পাঁচ দিন চলে দুর্গোৎসব।

অষ্টমী ও নবমী শেষে মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসবের। মহাঅষ্টমীর সকালে মণ্ডপে আসা ভক্তরা জানান, তারা দেবীর কাছে শান্তি প্রার্থনা করতে এসেছেন। আজ রাতে অনুষ্ঠিত হবে সন্ধিপূজা।

শেয়ার করুন