ওমানে ভিসা স্থগিত, শ্রমিক যেতে না পারলে প্রবাসী আয় কমার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওমান

বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য সব ধরনের ভিসা দেওয়া স্থগিত করেছে ওমান। এতে ভবিষ্যতে দেশে প্রবাসী আয় আসা আরও কমবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ যখন কমে যাচ্ছে, তখন বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়ার ব্যাপারে ওমানের এই বিধিনিষেধের খবর এল। গত সেপ্টেম্বর মাসে ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় এসেছে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুতে প্রবাসী আয়ের অবদান কমে যাওয়া দেশের রিজার্ভ দ্রুত হ্রাস পাওয়ার অন্যতম কারণ। ওমান থেকে পাওয়া খবরে বলা হয়েছে, রয়্যাল ওমান পুলিশ (আরওপি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা গতকাল মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হয়েছে।

ওমানে ন্যাশনাল সেন্টার ফর স্ট্যাটিসটিকস অ্যান্ড ইনফরমেশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে প্রায় ১৫ লাখ বিদেশি বাস করেন, যাদের মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিরা সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি। এই সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের প্রবাসী আয়ের নবম বৃহত্তম উৎস ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান। ২০২১-২২ অর্থবছরে ওমান থেকে দেশে ৮৯ কোটি ৭৪ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে পরিমাণে কিছুটা কমলেও নবম স্থানেই ছিল ওমান। সেবার এসেছিল ৭৯ কোটি ডলার।

universel cardiac hospital

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই মাসে দেশটি থেকে প্রবাসী আয় এসেছে ১২ কোটি ডলার; আগস্ট মাসে এসেছে ৬ কোটি ৪৭ লাখ ডলার আর সেপ্টেম্বর মাসে এসেছে ৪ কোটি ২৪ লাখ ডলার। অর্থাৎ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ওমান থেকে দেশে প্রায় ২৩ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। যদিও পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, জুলাইয়ের পর প্রতি মাসেই সেখান থেকে প্রবাসী আয় আসা কমেছে; তারপরও প্রথম তিন মাসে দেশটির স্থান পঞ্চম।

এই পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ওমানের এই ভিসা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রবাসী আয় প্রবাহে প্রভাব ফেলবে। তবে তারা ঠিক কী কারণে এই সিদ্ধান্ত নিল, তা খতিয়ে দেখতে হবে। তারা কি সৌদি আরবের মতো নিজেদের মানুষ দিয়ে বেশি কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে, তা বোঝা দরকার। এরপর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

শেয়ার করুন