বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ সংগঠন ইসলামিক স্টেট ও তালেবানের কায়দায় বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণা করছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, বিএনপি এখন চূড়ান্ত সন্ত্রাসী দলে রূপান্তরিত হয়েছে। তারা আর রাজনৈতিক দল নেই। আমরা এ সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে বদ্ধপরিকর। তারা ভেবেছে, একের পর এক অবরোধ ডেকে দেশকে অস্থিতিশীল করবে। তারা দেখতে পাবে, জনগণ তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে, জনগণই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, সরকারের কিছু করতে হবে না। আমরা জনগণের সঙ্গে থাকবো।
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সামসময়িক বিষয়াদি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মাঝখানে দুদিন বিরতি দিয়ে বিএনপি ও তাদের জোটের দলগুলো অবরোধ ডেকেছে। আগে কর্মসূচি ঘোষণা করতে সংবাদ সম্মেলন করা হতো। এখন দেখতে পাচ্ছি, বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণার সঙ্গে নিষিদ্ধ সংগঠনের কর্মসূচি ঘোষণার কোনো পার্থক্য নেই। বিভিন্ন দেশে যেসব নিষিদ্ধ সংগঠন থাকে, তারা যে রকম কর্মসূচি ঘোষণা করে, সেই আদলে অর্থাৎ তালেবানি কায়দায় বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণা করা শুরু করেছে।
তিনি বলেন, আফগানিস্তানে তালেবান যখন ক্ষমতায় ছিল না, তখন তারা যেভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করতো কিংবা ইসলামিক স্টেট যেভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করে, ঠিক একই কায়দায় অনলাইনে তারা এখন কর্মসূচি ঘোষণা শুরু করেছে। তাদের কর্মসূচি বলতে কার্যত অবরোধের নামে গাড়ি-ঘোড়া, মানুষের ওপর হামলা, অগ্নিসংযোগ করা। আমরা বহু বছর বিরোধী দলে ছিলাম, কলেজে ছাত্রলীগের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি, ১৬ বছর বয়স থেকে। আমরা পিকেটিং করতাম, রাস্তায় বড়োজোর রিকশার পাম্প ছেড়ে দিতাম, মানুষকে বোঝাতাম, মিছিল করতাম—এর বেশি কিছু না। তাও পুলিশের লাঠিপেটা খেতাম।
বিএনপি অবরোধের নামে মানুষের সহায়সম্পদে হামলা চালাচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, যে কেউ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারে। কিন্তু বিএনপি সেটা করছে না। ইসরায়েলি বাহিনীর হাত থেকে যেমন হাসপাতাল, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স রেহাই পাচ্ছে না, তেমনি বিএনপির হাত থেকে কোনো কিছু রেহাই পাচ্ছে না। শিক্ষার্থী বহনকারী বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে, যেমন ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় করছে।
তিনি বলেন, গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নির্মমতা নিয়ে বিএনপি-জামায়াত একটি কথাও বলেনি। সারা দুনিয়ায় প্রতিবাদ হচ্ছে, হাজার হাজার মানুষের প্রতিবাদ সমাবেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। লন্ডনে লাখো মানুষের সমাবেশ হচ্ছে। ইউরোপীয় দেশগুলোতে সরকারের নির্দেশ অমান্য করে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সমাবেশ হচ্ছে। অর্থাৎ বর্বরতার বিপক্ষে সমাবেশ হচ্ছে। এখানে বিএনপি-জামায়াত একটি শব্দও বলেনি। কারণ ইসরায়েলি বাহিনীর অনুকরণে তারা মানুষের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
দেশে-বিদেশে বসে গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা নানা ধরনের গুজবও রটাচ্ছে দেশ-বিদেশ থেকে। যারা গুজব রটাচ্ছে, তাদেরও শনাক্ত করার কাজ চলছে। কেউ কেউ ভেবেছে, বিদেশে বসে গুজব রটিয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে। যেখান থেকে গুজব রটানো হচ্ছে, আমরা সেই দেশে বসে সেখানকার আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বিদেশ থেকে যারা গুজব রটাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নেবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, সেখানে বাংলাদেশি কমিউনিটি আছে। এর আগেও বাংলাদেশি অভিবাসীরা গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে সেখানকার আইনে ব্যবস্থা নিয়েছে। তাদের অনেককে আইনের মুখোমুখি হতে হয়েছে। সেই প্রক্রিয়া জোরদার করা হবে। এর পাশাপাশি আমাদের মিশনও সেখানকার সরকারকে বিষয়টি অবহিত করবে।