শ্রমিক অসন্তোষের কারণে টানা আটদিন বন্ধ থাকার পর গাজীপুরে পোশাক কারখানাগুলো খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এরপর সোমবার ১৩ নভেম্বর সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন।
পুলিশ, কারখানা কর্তৃপক্ষ, শ্রমিকরা ও এলাকাবাসী জানায়, বেতন বৃদ্ধির দাবিতে দীর্ঘদিন গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকার পোশাক শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা সড়ক, মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করেন। বিভিন্ন কারখানা, যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
এছাড়াও দফায় দফায় শ্রমিক পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ অবরোধ চলাকালে এবং শ্রমিক পুলিশ সংঘর্ষে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় তিন জনের মৃত্যু হয়। পরে শ্রমিক আন্দোলনের মুখে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
এরপর সোমবার (১৩ নভেম্বর) সকালে গাজীপুরের প্রায় সকল পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। আর শ্রমিকরাও শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন। সকাল থেকেই গাজীপুরের ২৩টি ছাড়া প্রায় সব কারখানায় খুলে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে কোনাবাড়ী শিল্পাঞ্চলের তুসুকা কারখানা এবং জরুন এলাকার স্ট্যান্ডার গ্রুপের কারখানা বন্ধ রয়েছে। তবে শ্রমিকরা নতুন করে নির্ধারিত ১২ হাজার ৫০০ টাকা বেতন মেনে নিয়েছেন কি না তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি।
গত কয়েক দিনের শ্রমিক আন্দোলনে গাজীপুরের পোশাক কারখানা, যানবাহনসহ বিভিন্ন ভাঙচুরের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পুলিশের গাড়ি ও কারখানা ভাঙচুরের দায়ে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ ও কারখানা কর্তৃপক্ষ। দুটি মামলায় হাজারের হাজারের বেশি শ্রমিককে আসামি করা হয়েছে।
কোনাবাড়ী এলাকার পোশাক শ্রমিক সাফায়েত হোসেন জানান, কারখানায় কাজে যোগ দিতে যাচ্ছি। তবে বেতনের বিষয়টি শ্রমিক নেতারাই বলতে পারবেন। কারখানা খুলে দিয়েছে ফলে আমরা কাজে যোগ দিয়েছি। কাজ না করলে বেতন পাবো না। তখন পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম জানান, শ্রমিক আন্দোলনের মুখে বিভিন্ন পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছিল কারখানা কর্তৃপক্ষ। কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর সোমবার (১৩ নভেম্বর) সকালে দুই একটি ছাড়া গাজীপুরের প্রায় সকল কারখানা খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পরে শ্রমিকরাও শান্তিপূর্ণভাবে কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছে। সকাল ১০ টা পর্যন্ত গাজীপুরের কোথাও কোনো শ্রমিক আন্দোলনের খবর পাওয়া যায়নি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটনের পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান জানান, শ্রমিকরা নতুন বেতন মেনে নিয়ে কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছেন। এখনও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাইনি। শান্তিপূর্ণভাবে শ্রমিকরা কাজ করছেন।