মদকে হালাল এবং মেডিসিন বলে অখ্যায়িত করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের সদ্য পদত্যাগী চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান ওলিওর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) জুম্মার নামাজের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে আলেম উলামাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ গ্রহণ করেন।
মানববন্ধন চলাকালে ওলামা সমন্বয় পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি ক্বারী আনাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল্লাহর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মাওলানা ইলিয়াছ চৌধুরী, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, ওলামা সমন্বয় পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সহ-সভাপতি কাজী আবুল কালাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলার মুফতি মাকবুল হোসেন।
সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন, কাজী খায়রুল ইসলাম, মোঃ মোমিন মিয়া, আব্দুল আজিজ অনিক প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, গত সোমবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের সদ্যপদত্যাগী চেয়ারম্যান লায়ন ফিরোজুর রহমান ওলিও ফেসবুক লাইভে এসে তার নিজের মদের ব্যবসার পক্ষে কথা বলেন। এ সময় তিনি মদকে হালাল ও মেডিসিন হিসেবে অখ্যায়িত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্য দেন। তার এমন বক্তব্যকে কোরআন অবমাননাসহ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের সামিল বলে অখ্যায়িত করে আলেম সমাজ।
ক্ষুব্ধ মুসল্লিরা বলেন, ‘আমরা শুনেছি তিনি নাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের এমপি হওয়ার জন্যে মনোনয়নপত্র কিনেছেন। আমরা মনে করি তার মতো ব্যক্তি যদি মনোনয়ন পেয়ে এমপি হন, তাহলে পাড়ায়-পাড়ায় মদের দোকান গড়ে উঠবে। মাদকসেবীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। আমরা এ ধরনের লোককে সামাজিক এবং ধর্মীয়ভাবে বয়কটের ঘোষণা করছি। এসময় তারা কোরআন অবমাননার দায়ে তাকে গ্রেফতারের দাবি জানান।
পরে লায়ন ফিরোজুর রহমান ওলিওকে গ্রেফতারের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে গিয়ে শেষ হয়।
উল্লেখ্য, গত ২০ নভেম্বর ফেসবুক লাইভে একজন যুবক ফিরোজুর রহমান ওলিওকে প্রশ্ন করেন ‘আপনি এমপি নির্বাচিত হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মদের বার খুলবেন কি?’
জবাবে ফিরোজুর রহমান ওলিও বলেন, ‘সংসদ সদস্যরাই মদের লাইসেন্স দিচ্ছে। এ দেশে বিখ্যাত মদের কারখানা বানায়ে রাখছে। আগে তো রেলস্টেশনে মদের দোকান ছিল। তুমি যদি আবদার করো তাইলে দেব। তবে তোমরা এই মদ খাইতে পারবা না। সেই শক্তি তোমাদের হইছে না। মদ হচ্ছে একটা মেডিসিন। ভালো কথা বলো। এটা মেডিসিন হিসাবে খায়। তোমার যদি ইয়ে থাকে, ডাক্তার বললে ব্যবস্থা করে দেব। আমরা তো ঘুষ খাইনা। আমরা তো মানুষের মনে আঘাত দেই না। আমরা শুনি, ঘুষের টাকা কোথায় ধরা খাইছে। সরকারকে জিগাইবা কেন দেয়। তোমাদের সরকারই দিতাছে।’
তিনি বলেন, আমার ব্যবসা পবিত্র ব্যবসা। আমি হালাল ব্যবসা করি। হালাল না হলে সরকার ব্যবসা করে কেন। হালাল না হলে সরকারই বেহালাল হয়া যায়। আমি ব্যাংকের ব্যবসা করি। মদের ব্যবসার জন্য যদি ১০টা বেত মারে। তাহলে ব্যাংকের ব্যবসার জন্য একশটা বেত মারবে। ইসলাম কী কইছে না কইছে সরকার বুঝবে। ভালো কথা বলো।’