আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলের অবশ্যই বিচার হতে হবে : এরদোয়ান

মত ও পথ ডেস্ক

এরদোয়ান
ফাইল ছবি

টানা দেড় মাস ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বর্বর সেই আগ্রাসনে নিহত হয়েছেন ১৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই ১০ হাজারের বেশি।

ইসরায়েলি এই হামলা থেকে বাদ যায়নি গাজার স্কুল, মসজিদ এমনকি হাসপাতালের মতো স্থাপনাও। এই পরিস্থিতিতে গাজায় যুদ্ধাপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলের অবশ্যই বিচার হতে হবে বলে জাতিসংঘের প্রধানকে জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আদালতে জবাবদিহি করতে হবে বলে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান মঙ্গলবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে বলেছেন। একইসঙ্গে তিনি গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনকে যুদ্ধাপরাধ বলেও অভিহিত করেছেন বলে তুর্কি প্রেসিডেন্সি জানিয়েছে।

রয়টার্স বলছে, বুধবার গাজা ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেই বৈঠকের আগে মঙ্গলবার মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।

তুর্কি প্রেসিডেন্সি জানিয়েছে, গাজা ইস্যুতে বুধবারের পরিকল্পিত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আগে এরদোয়ান ও গুতেরেস ইসরায়েলের বেআইনি হামলার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাশা, অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিতে মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ফোনকলে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন- ইসরায়েল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখের সামনে আন্তর্জাতিক আইন, যুদ্ধের আইন এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে নির্লজ্জভাবে পদদলিত করে চলেছে এবং ইসরায়েল যে অপরাধ করেছে, তাতে দেশটিকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে জবাবদিহি করতে হবে।’

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান নিউইয়র্কে বুধবার অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকে যোগ দেবেন।

উল্লেখ্য, গাজায় বর্তমানে যুদ্ধবিরতি চলছে। দেড় মাসেরও বেশি সময় যুদ্ধ চলার পর গত শুক্রবার চারদিনের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছায় হামাস ও ইসরায়েল।

এছাড়া গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৬ হাজারেরও বেশি শিশু। এছাড়া নিহতদের মধ্যে নারীর সংখ্যাও চার হাজার।

মূলত গাজায় এখন যুদ্ধবিরতি চললেও ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আরও মরদেহ উদ্ধার হওয়ায় নিহত ১৫ হাজার ছাড়াল। গাজার মিডিয়া অফিসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, গাজার রাস্তা এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও মৃতদেহ উদ্ধারের পর অঞ্চলটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে।

রয়টার্স বলছে, তুরস্ক গাজায় ইসরায়েলের হামলার কঠোর সমালোচনা করে আসছে এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিরোধ নিরসনে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের বিষয়ে আলোচনার সুযোগ দেওয়ার জন্য অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।

এছাড়া প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান গাজায় ইসরায়েলি হামলাকে গণহত্যা বলে অভিহিত করেছেন এবং ইসরায়েলকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ হিসেবেও অভিযুক্ত করেছেন। যদিও ইসরায়েল এই ধরনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে। ইহুদিবাদী এই দেশটির দাবি, তারা শত্রুর বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য কাজ করছে।

শেয়ার করুন