যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাত সরকারকে পাত্তা দেয় না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম নীতি নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ দেখছেন না পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাত তাদের দেশের সরকারকে পাত্তা দেয় না। সে কারণে এখানে যুক্তরা‌ষ্ট্রের শ্রম নীতির কোনো প্রভাব পড়বে না। আজ বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজের দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা ব‌লেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবিষয়ক নতুন নীতি নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ রয়েছে বলে সতর্ক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (বাণিজ্য) মো. সেলিম রেজা। ওই চিঠির বিষয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এখন কী হবে, না হবে আমি জানি না। তবে আমাদের বেসরকারি খাতের ওপর আমার বিশ্বাস আছে এবং আমি এটাও বিশ্বাস করি, আমেরিকায় সরকার বললেই জিনিস বন্ধ হয় না। কারণ, সেখানে বেসরকারি খাত জিনিসপত্র কেনে। তারা সরকারকে অনেক সময় পাত্তাই দেয় না। তারা কেনে কারণ তারা জিনিসটা সস্তায় পায়। তৈরি পোশাকশিল্প ব্যক্তিমালিকানাধীন এবং যারা কেনে তারাও ব্যক্তিমালিকানাধীন।’

universel cardiac hospital

দামে সস্তা ছাড়াও ভালো মানের পণ্য সময়মতো পায় বলেই যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলাদেশের ওয়াশিংটন দূতাবাসের কর্মকর্তার ওই চিঠি নিয়ে তিনি বলেন, আমি শুনেছি এটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখছে। আমি এ বিষয়টি দেখি না।

ওই চিঠি নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের সমস্যা হলো দেশের প্রতি ভক্তির অভাব আছে। এ জন্য অনেক গোপন নথি প্রকাশ করে দেয় আমাদের সম্মানিত মিডিয়া। এটা দুঃখজনক। এটা অন্য দেশে হয় না।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন, শ্রম অধিকার ও শ্রমিকদের মানসম্মত জীবনযাপন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সম্প্রতি একটি প্রেসিডেনশিয়াল মেমোরেন্ডামে সই করেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ১৬ নভেম্বর তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে বলেন, যারা শ্রমিকদের অধিকারের বিরুদ্ধে যাবেন, শ্রমিকদের হুমকি দেবেন কিংবা ভয় দেখাবেন, তাদের ওপর প্রয়োজনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

এরপর ২০ নভেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে ওই চিঠি পাঠায় ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস। চিঠিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম নীতি একটি বৈশ্বিক নীতি, যা সব দেশের ওপর আরোপিত হতে পারে; তারপরও এটা বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে যে বাংলাদেশ এই নীতির লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। স্মারকটির প্রকাশ অনুষ্ঠানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ভারপ্রাপ্ত শ্রমমন্ত্রী বাংলাদেশের শ্রম–সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন।

ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, ‘এটা একটা রুটিন বৈঠক। এই বৈঠকের বিষয়ে আপনারা (সাংবাদিকেরা) জানলেন কেমনে? আপনারা সবকিছুই জেনে যান।’

শেয়ার করুন