ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩: নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্ভার উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনটি জেলার মর্যাদার আসন বলে পরিচিত । আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন উপলক্ষে আসনটিতে বিরাজ করছে উৎসব মুখর পরিবেশ। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা গতকাল ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টায় শেষ হয়েছে। ১৮ দিনের প্রচারণায় শঙ্কামুক্ত থাকতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীকে।

আসনটিতে চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। তিনি জাতীয় সংসদের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব ও পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে প্রতিরোধ যোদ্ধা ছিলেন তিনি।

universel cardiac hospital

নৌকা প্রতীক নিয়ে অনেকটাই নির্ভার উবায়দুল মোকতাদির। জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী দেখা গেছে নৌকার এই প্রার্থীকে। তার বিগত দিনের কর্মকাণ্ডে ভোটারেরাও সন্তুষ্ট।

স্থানীয়রা জানায়, পর পর তিনবারের এই সংসদ সদস্য এলাকায় প্রায় সাড়ে ১০হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেছেন। বিশেষ করে তার সময়ে নব-গঠিত বিজয়নগর উপজেলাকে ঢেলে সাঁজিয়েছেন। বেশ কিছু মেগা প্রকল্পও বাস্তবায়ন করেছেন।

বিজয়নগরের জনগণ যাতে সহজে জেলা সদরে আসা-যাওয়া করতে পারে এজন্য হাওরের উপর দিয়ে তিনি প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা (শেখ হাসিনা সড়ক) নির্মাণ করেছেন। রামপুর-মনিপুর (উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী সড়ক) ৯ কিলোমিটার রাস্তা, মির্জাপুর-সহদেবপুর-পাহাড়পুর রাস্তা, সিঙ্গারবিল-দেওয়ানবাজার ১৭ কিলোমিটার রাস্তা, সিঙ্গারবিল-চান্দুরা রাস্তাসহ বিজয়নগরে মোট ১২৩ কিলোমিটার নতুন রাস্তা নির্মাণ করেছেন। এছাড়া বিজয়নগর উপজেলার শিক্ষা, চিকিৎসা ও অবকাঠামো খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তার হাত ধরে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় ১৪৮ কিলোমিটার নতুন রাস্তা নির্মাণ করার পাশাপাশি সংস্কার করা হয়েছে ১৫৫ কিলোমিটার রাস্তা। এখানেও শিক্ষা, চিকিৎসা ও অবকাঠামো খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তার হাত ধরে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মেড্ডা থেকে ভাদুঘর পর্যন্ত তিতাস নদীর পশ্চিমপাড়ে বেরিবাঁধ নির্মাণ করেছেন। তিতাস নদী খননের মাধ্যমে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে এনেছেন। পৌরসভার বাসিন্দাদের বর্জ্যের অভিশাপ থেকে মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৪ হাজার ৬৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেক থেকে অনুমোদন করিয়েছেন। এটি ২০২৫ সালের মধ্যে উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বর্জ্যের দুর্গন্ধ থেকে স্থায়ী মুক্তি পাবে পৌরসভাবাসী। তার এমন সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে আবারও নৌকায় আস্থা তাদের।

এছাড়াও তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনকে সু-সংগঠিত রেখেছেন। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করায় নির্বাচনে তিনি সেইফ জোনে আছেন।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, `আমি ১৩ গত বছর নির্বাচনী এলাকার জনগণের জন্য কাজ করেছি। এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন বাস্তবায়ন করেছি। ভোটাররা আমাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে ইনশাল্লাহ।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনএম, জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আট জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। অন্যান্যরা হলেন- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) জামাল রানা-(নোঙ্গর প্রতীক), আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান-(কাঁচি প্রতীক), ইসলামী ফ্রন্টের সৈয়দ মো. নূরে আজম (মোমবাতি প্রতীক), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) মো. আবদুর রহমান খান (মশাল প্রতীক), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী (বটগাছ প্রতীক), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) সৈয়দ মাকসুদুল হক আক্কাছ (আম প্রতীক) ও বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির সোহেল মোল্লা (একতারা প্রতীক)।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে মোট ভোটার রয়েছে ছয় লাখ ২১ হাজার ৫৮৪ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় চার লাখ ১৩ হাজার ৯৩২জন এবং বিজয়নগর উপজেলায় দুই লাখ ৭ হাজার ৬৫২ জন।

শেয়ার করুন