সরকারদলীয় লোকজন ভোট ডাকাতির নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
তিনি বলেন, জামালপুর-কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জায়গায় আমাদের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর পেয়েছি। পুরোনো কায়দায় আওয়ামী লীগ ভোটকেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতির নির্বাচন করছে। যদিও আমাদের বারবার আশ্বস্ত করা হয়েছিল এমন কোনো ঘটনা ঘটবে না।
রোববার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর নগরের শিশুমঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
জিএম কাদের বলেন, ইতোমধ্যে সকাল থেকে আমি তিনটি ঘটনা জেনেছি যে ভোট ডাকাতির নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ভোট স্বাভাবিক হবে না, সেই ধরনের একটা আবহ তৈরি করা হচ্ছে সেইসব জায়গায়। তবে সব জায়গার খবর এখনো পাইনি।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আশা করেছিলাম ভোট স্বাভাবিক হবে। কিন্তু রংপুর ছাড়া বেশির ভাগ জায়গায় ভোট স্বাভাবিক হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, সব সময় আশঙ্কা ছিল যে নির্বাচনে নিয়ে এসে আমাদের কোরবানি করা হবে। হয়ত বোঝা যাবে ভবিষ্যতে। কোরবানি করে নির্ভেজাল একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করা হবে, এটাই আমরা আশঙ্কা করছিলাম। এসব আশঙ্কা সত্যি হয় কি না বিকেল হলেই বোঝা যাবে।
২০১৮ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কি না, এর জবাবে জিএম কাদের বলেন, এখন পর্যন্ত কিছু কিছু নমুনা দেখা যাচ্ছে। কারণ তাদের (আওয়ামী লীগ) লোকবল বেশি। প্রশাসন তাদের সঙ্গে পরোক্ষভাবে আছে। অনেক জায়গায় কোথাও বাধা দিচ্ছে না, চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। এরকম তারা করে যাচ্ছে। যতদূর খবর পেয়েছি এতে আমরা উদ্বিগ্ন।
দিনশেষে জাতীয় পার্টির শঙ্কা যদি সত্যি হয়, তাহলে দলের অবস্থান কি হবে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেটা যখন হবে তখন বলব। আগে থেকে কিছু বলতে চাই না। আমরা সার্বিক পরিস্থিতি দেখে দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
এ সময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগরের সভাপতি সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসীর, জেলা কমিটির সদস্য সচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাকসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রংপুর-৩ (সদর উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশনের ৯ থেকে ৩৩নং ওয়ার্ড) আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের দলীয় প্রতীক ‘লাঙ্গল’, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আব্দুর রহমান রেজু ‘একতারা’, বাংলাদেশ কংগ্রেসের একরামুল হক ‘ডাব’, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সহিদুল ইসলাম ‘মশাল’, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শফিউল আলম ‘আম’ এবং তৃতীয় লিঙ্গের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানী ‘ঈগল’ প্রতীকে লড়ছেন।
এই আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তুষার কান্তি মন্ডলকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। ভোটযুদ্ধে এ আসনে জিএম কাদেরসহ ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে সাধারণ ভোটারদের কাছে ‘লাঙ্গল’ ও ‘ঈগল’ রয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আলোচনায়। এখানে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬৮ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৪৭ হাজার ২৯৪ জন ও পুরুষ ২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৭২ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ২ জন।