প্রভুদের পরামর্শে চললে রাজনীতিতে টিকে থাকা যাবে না: শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

বিদেশি প্রভুদের পরামর্শ মেনে চললে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কেউ টিকে থাকতে পারবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি এবার নির্বাচন বানচাল করতে নেমেছিল। এটাই তাদের লক্ষ্য ছিল। তাদের কিছু (বিদেশি) মুরুব্বি বা প্রভু আছে। তারাও চেয়েছিল নির্বাচনটা যেন বানচাল করা যায়। কিন্তু তারা বাংলাদেশের জনগণকে চেনে না। বিদেশি প্রভুদের পরামর্শে বাংলাদেশের রাজনীতিতে টিকে থাকা সম্ভব হবে না।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে গণভবনে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নির্বাচন-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে যারা বড় খেলা খেলতে চেয়েছে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হয়েছে, নির্বাচন হতে দেবে না। প্রভুদের (বিদেশি) পরামর্শে চললে বাংলাদেশে আর চলা লাগবে না। তবে যদি সৎ পরামর্শ হয়, সেটা ভালো কথা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের কোনো (বিদেশি) প্রভু নেই। বাংলাদেশের জনগণই আমাদের প্রভু ও শক্তি। জনগণের বিশ্বাস ও আস্থাই আমাদের শক্তি। জনগণই আওয়ামী লীগের শক্তি। আমাদের কোনো বিদেশি প্রভুর প্রয়োজন হয় না।

তিনি বলেন, আমরা প্রমাণ করেছি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। নির্বাচন বানচালে বিএনপি-জামায়াতের সব ষড়যন্ত্র ভেস্তে দিয়ে দেশের জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দিয়েছে। ভোটারদের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী দেশ ও জনগণের কল্যাণে সবকিছু ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দল মনোনীত অনেক প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হয়েছেন। যদিও তারা ভেবেছিলেন নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী হবেন।

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভেদের ফায়দা লোটার ষড়যন্ত্র হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের ম্যান্ডেটকে সম্মান দেখাতে হবে। সব ভেদাভেদ ভুলে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে।

এবারের সংসদ নির্বাচনে ভোটদানে নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের প্রশংসা করে তিনি এটিকে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতের প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, মুষ্টিমেয় খুনি এবং যুদ্ধাপরাধী দলের লোক ছাড়া দেশের সব মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। নির্বাচন সুষ্ঠু এবং প্রতিযোগিতামূলক হয়েছে। নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। এত এত দলের মধ্যে দু-চারটা দল অংশগ্রহণ না করলে কিছু আসে যায় না। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটে অংশগ্রহণ করেছেন, সেটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২২২টি আসনে জয় পেয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকারের গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি ও জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন।

আগামীকাল সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন। পরদিন বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেবেন।

শেয়ার করুন