দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা: অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। ফাইল ছবি

রমজানে যেসব পণ্যের প্রয়োজন হয় দেশে সেগুলোর পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারপরও কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সভায় ভোজ্যতেল, চিনি, খেঁজুরসহ আমদানিনির্ভর ভোগ্যপণ্যের শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্য শিগগির জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চিঠি দেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে ভোগ্যপণ্য আমদানিতে পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। ডলার নিশ্চিত করা না গেলে অন্যান্য মুদ্রায় আমদানির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একই সঙ্গে উৎপাদন ও আমদানি পর্যায় থেকে ভোক্তা পর্যন্ত যৌক্তিক পণ্যমূল্য নির্ধারণে বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করা হবে।

বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী জানান, রমজান সামনে রেখে পণ্যের উৎপাদন, মজুত ও সরবরাহ নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পণ্যের যথেষ্ট মজুত রয়েছে। কোনো পণ্যে ঘাটতি না থাকায় চিন্তার কোনো কারণ নেই। কিছু মহল চেষ্টা করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দ্রব্যমূল্য বাড়াতে। সরকার এটিকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে। পণ্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে কাজ করছে সরকার। তবে দরকার হলে আরও কঠিন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার এখনও পরিস্থিতি হয়নি। তাহলে জরুরি বৈঠকের প্রয়োজন হলো কেন– এ প্রশ্নে তিনি বলেন, নির্বাচনের পর স্বাভাবিকভাবে সবাই বলছেন কী করছেন, কী করলেন? তাই সবাইকে নিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি জানতেই বৈঠক করা হয়েছে। চালের দাম বাড়ানোর পর সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে তাই ইতোমধ্যে দাম কিছুটা কমেছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। চালের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১ টাকা কমার বিষয়ে তিনি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে।

জিনিসপত্রের দাম কতো দিনের মধ্যে কমবে, এ প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, সেভাবে এটা কখনোই বলা সম্ভব না। আমদানিকে প্রাধান্য দেওয়া হবে কিনা– এ প্রশ্নে তিনি বলেন, দরকার হলে আমদানি করতে হবে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর পদক্ষেপ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের মুদ্রায় লেনদেনের আলোচনাও চলছে। বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীরা খারাপ অবস্থায় থাকায় তাদের নিয়ে সরকারের ভাবনা কী– এ প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, এমন পরিস্থিতিতে প্রণোদনা দেওয়া ছাড়া অন্য কিছু করা যায় না। তবে বড় খাতগুলো এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

শেয়ার করুন