রমজানে দাম সহনীয় রাখতে ভোজ্যতেল, খেজুর, চিনি ও চালের আমদানি শুল্ক কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে শেখ হাসিনা এ নির্দেশ দেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
শুল্ক কতটুকু কমানো হবে, সেটি এখন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, নির্বাচনের পর দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের সমন্বয়ের ভিত্তিতে এটির উপর কাজ করতে বলেছেন। আজ মন্ত্রীদের কাছ থেকে এটির সর্বশেষ অবস্থা জেনেছেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রীরা কী কী কাজ করেছেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এরপর প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। রমজানে যে পণ্যগুলোর দরকার হয়, বিশেষ করে খেজুর, ভোজ্যতেল, চিনি ও চাল- এ চারটি পণ্যের শুল্কহার হ্রাস করার জন্য এনবিআরকে নির্দেশনা দিয়েছেন। সেটি নিয়ে এখন তারা কাজ করছে। কী পরিমাণ শুল্ক কমানো হবে সেটি এনবিআর হিসাব করে দেখবে, যাতে দ্রব্যমূল্যের চাপটা মানুষের ওপর কম থাকে।
মাহবুব হোসেন বলেন, মন্ত্রীরা মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করছেন। বেশ কিছু আইটেমের ওপর ইমপ্যাক্ট আসা শুরু করেছে। আগামী রমজান মাস বিবেচনা করে আরও যাতে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, সেজন্য এই চারটি পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক কমানোর নির্দেশনা দিয়েছেন।
‘বাজারে যেন সরবরাহ ও চাহিদার কোনো ঘাটতি না থাকে, প্রধানমন্ত্রী সেই নির্দেশনা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এখন এলসি ওপেনের পরিমাণ অনেক বেশি আছে, খাদ্য মজুতের পরিমাণ অনেক বেশি আছে, এ তথ্যগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরবরাহে যেন কোনো ঘাটতি না হয়, সেদিকে সমন্বিতভাবে নজরদারী করতে হবে।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে মন্ত্রীরা যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মাঠে যেভাবে কাজ চলছে সেটি কন্টিনিউ করতে বলেছেন। সাপ্লাই যাতে কোনোভাবেই বিঘ্ন না হয়, সেজন্য এলসি ওপেন করে দিচ্ছেন যাতে কেউ কোনো কারসাজি করতে না পারে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে এলসির সমস্যা নেই জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত বছরের এ সময়ে ৩৭ হাজার ১০৭ টন খেজুর আমদানির এলসি ওপেন করা ছিল, এবার এখন পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৭৩৪ টন এলসি ওপেন করা আছে।
গত বছর একই সময় ৯৭ হাজার ২৮৭ টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানির এলসি করা ছিল। এবার এক লাখ ২৫ হাজার ৩৭৪ টনের এলসি করা আছে। গত বছর ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৮৭০ টন অপরিশোধিত চিনির এলসি ওপেন হয়েছিল। এবার ৩ লাখ ৮৭ হাজার ১৩৮ টন চিনি আমদানির এলসি ওপেন করা আছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দ্রব্যমূল্য কমাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা সিরিয়াসলি নিজেদের এঙ্গেজ করেছেন। চালের দামে নিম্নগামী ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে।