আসন্ন পবিত্র রমজানে তারাবিহ ও সাহ্রিতে বিদ্যুতের সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রমজানে নিত্যপণ্যের দামে লাগাম টানা সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আজ বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবুল কালাম সম্পূরক এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জানতে চান, পবিত্র রমজান মাসে তারাবিহর নামাজ ও সাহ্রির সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে কি না।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার অনেক অর্থ ব্যয় করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। ভর্তুকি দিয়ে তা বিতরণ করা হয়। এখন বিশ্বব্যাপী তেল, এলএনজি ও পরিবহনসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। তারপরও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রচেষ্টা রয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, এটা ঠিক যে যেহেতু আমাদের জ্বালানি তেল বা এলএনজির সংকট আছে, সেহেতু সময়ে-সময়ে…তা ছাড়া জানেন যে, যান্ত্রিক ব্যাপার…, অনেক সময় কোনো কোনো কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পায় বা ব্যাহত হয়। সে জন্য আমরা ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, হ্যাঁ, তারাবিহর নামাজ ও সাহ্রির সময় বিদ্যুতের সমস্যা হবে না; বরং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য যদি প্রয়োজন হয়…যখনই প্রয়োজন হবে, অন্তত দিনের কোনো এক সময় যখন বেশি বিদ্যুতের প্রয়োজন নেই, সে সময়টায় যদি দু-তিন ঘণ্টা লোডশেডিং করে দেওয়া যায়, সহনীয় পর্যায়ে থাকবে, তাহলে কিন্তু আর বিদ্যুতের সংকট তারাবিহ ও সাহ্রির সময়ে হবে না। আমাদের প্রচেষ্টা সেইভাবে থাকবে।
একসময় দেশে ১০-১২ ঘণ্টা, দিনের পর দিন লোডশেডিং থাকত, এখন সে অবস্থা নেই উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার মনে হয়, মাঝেমধ্যে থাকা (লোডশেডিং) ভালো। তাহলে মানুষ অতীতকে ভুলে যাবে না। অন্তত উপলব্ধি করবে কোথায় ছিলাম আর কোথায় এসেছি।
সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, দেশ ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির সঙ্গে মানুষের জীবনমানেরও উন্নয়ন ঘটেছে। তাই অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি জ্বালানি, প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদাও ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। ফলে গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহ সামঞ্জস্যপূর্ণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই সংকট কাটাতে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করার লক্ষ্যে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ যদি নিত্যপণ্যের মূল্য বেশি নেয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, নিত্যপণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সরকার সব ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক সম্পূরক এক প্রশ্নে বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই সুযোগগুলো ব্যবহার করে। এতে উদ্দেশ্য সফল হয় না। বিষয়টি কঠোরভাবে নজরদারি করে অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না, তা জানতে চান তিনি।
এই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। তারপরও যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে, অবশ্যই তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।