ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বাস্তবায়নের প্রতিবাদে আসাম, পশ্চিমবঙ্গ ও কেরালায় প্রতিবাদ–বিক্ষোভ হয়েছে। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া মার্ক্সিস্টসহ (সিপিআইএম) বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই আইনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, সিএএ ব্যবহার করে আবার পশ্চিমবঙ্গ ভাগের খেলায় নেমেছে বিজেপি।
সিএএ আইন অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যেসব সংখ্যালঘু (হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ও পার্সিধর্মী) সাম্প্রদায়িক নির্যাতন-নিপীড়নের কারণে ভারতে চলে এসেছেন, তাদের নাগরিকত্ব দিতে পারবে কেন্দ্রীয় সরকার। খবর এনডিটিভির।
সিএএ বাস্তবায়নের ঘোষণার পর গতকাল রাতেই আসামের গুয়াহাটিতে আইনের নির্দেশিকার অনুলিপি পোড়ানোসহ বিক্ষিপ্ত প্রতিবাদ হয়।
আজ আসাম পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের বড় ধরনের সংঘর্ষ হয়েছে উত্তরপূর্ব আসামের শিবসাগর জেলায়। শিবসাগর জেলা ছাত্র সংসদ (এসডিএসইউ) আয়োজিত সমাবেশ পুলিশ রুখতে গেলে সন্ধ্যায় ছাত্রদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের বেশ কিছু প্রতিনিধি আহত হয়েছেন। স্থানীয় প্রচার মাধ্যম জানিয়েছে, কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বলেছেন, সিএএ ব্যবহার করে আবার পশ্চিমবঙ্গ ভাগের খেলায় নেমেছে বিজেপি।
গতকাল সোমবার থেকে আসামের মানুষ রাস্তায় নেমেছেন—নলবাড়ি থেকে ডিব্রুগড়, গুয়াহাটি থেকে গোলাঘাট পর্যন্ত। উত্তর আসামের শিবসাগর থেকে জোরহাটে প্রতিবাদ চলছে আজ মঙ্গলবারেও।
২০১৯ সালে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা যে ধরনের স্লোগান দিয়েছিলেন, সোমবার রাতেও তা শোনা গেছে, যেমন—‘সিএএ আমি নামানু (আমরা সিএএ মেনে নেব না) বা ‘জয় অ্যাই অসম (মা আসামের জয়)।’ তাদের ধারাবাহিকভাবে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতেও শোনা যায়।
আজ মঙ্গলবার অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আসু) একটি গণ ‘সত্যাগ্রহ’ আন্দোলনের অংশ হিসেবে একাধিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এ আন্দোলন এখন চলবে বলে তারা জানিয়েছে। অসম জাতীয়তাবাদী যুব-ছাত্র পরিষদসহ ৩০টি জাতিগত সংগঠন এবং অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের সমর্থনে আসু এই আইনের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার রাতে রাজ্যজুড়ে মশাল সমাবেশ করবে। সেখান থেকেই বিক্ষোভ কর্মসূচি দানা বাঁধবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ছাত্র-যুব পরিষদের মুখপাত্র পলাশ চাংমাই স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সিএএ-বিরোধী আন্দোলন চলবে। আমরা কোনো অবস্থাতেই এই আন্দোলন থেকে সরে আসব না, যখন অসমিয়া সম্প্রদায় একটি অস্তিত্বের সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।’
মঙ্গলবার সকাল থেকে আসু, যুব-ছাত্র পরিষদ ও কৃষক মুক্তিসংগ্রাম সমিতি গোলাঘাট জেলায় মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।