উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ আসন্ন। সেখানকার জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ মানুষ ক্ষুধার সম্মুখীন। সোমবার জাতিসংঘ-সমর্থিত এক প্রতিবেদনে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘের মেডিকেলএইডের সিইও মেলানি ওয়ার্ড বলেছেন, গাজায় আসন্ন দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে সতর্কবার্তার কোনো মানে হয় না, যদি তারা এ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেয়।
মেলানি বলেন, গত পাঁচ মাস ধরে আমরা ধারাবাহিকভাবে গাজায় পরিস্থিতি কতটা গুরুতর হয়ে উঠছে, সে সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছি। কিন্তু কিছুই করা হয়নি। আসলে সেখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এখন এ সমস্যার সহজ সমাধান হলো, ইসরায়েল শুধু খাদ্য সহায়তা দিলেই আমরা অবিলম্বে সেখানকার মানুষের ক্ষুধা দূর করতে পারতাম।
এ ছাড়া গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘনিয়ে আসার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেফ বোরেল। একই সঙ্গে দেশটির বিরুদ্ধে অনাহারকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ করেছেন বোরেল। সোমবার এসব কথা বলেছেন তিনি। তবে দেশটির বিরুদ্ধে আনা এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিকে গাজা উপত্যকার আল-শিফা হাসপাতালে রাতভর আবারও অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
সোমবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, হাসপাতাল ভবনটি হামাসের জ্যেষ্ঠ জঙ্গিরা ব্যবহার করছে জানার পরই হামলা চালিয়েছে তারা।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন, হাসপাতালের সীমিত এলাকায় ট্যাঙ্ক, ড্রোন ও ভারী অস্ত্র দিয়ে উচ্চমাত্রার নির্ভুল অপারেশন চালাচ্ছে আইডিএফ। হাসপাতালের ভেতর থেকে সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো ভয়েস বার্তায় মুহাম্মদ আল-সায়িদ নামের একজন জানিয়েছেন, সেনারা হাসপাতাল ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়েছে। এখানকার পরিস্থিতি ভয়ানক। এখানে-সেখানে মৃতদেহ পড়ে আছে।
টানা পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই ১৩ হাজারের বেশি। এমন তথ্যই জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু নিরাপত্তা ও অধিকারবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। এ ছাড়া গাজার অন্য শিশুরা গুরুতর অপুষ্টিতে ভুগছে।
খবর : বিবিসি ও রয়টার্স