সিলেটের জৈন্তাপুরে তিন দফা দাবিতে সাড়ে চার ঘণ্টা সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে রাখার পর কর্মসূচি স্থগিত করেছেন স্থানীয় লোকজন। হতাহত পরিবারের সদস্য, প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর কর্মসূচি স্থগিত করেন তারা। এ বিষয়ে আগামীকাল বুধবার রাতে আবার বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টায় শুরু হওয়া এই অবরোধ কর্মসূচি বেলা পৌনে ৩টার দিকে স্থগিত ঘোষণা করা হয়। অবরোধের কারণে মহাসড়কটিতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটে আটকে দুর্ভোগ পোহাতে হয় শত শত যাত্রীকে।
অবরোধকারীদের তিনটি দাবি হলো, গতকাল সোমবার সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছয়জনের পরিবারকে পরিবহন শ্রমিকনেতাদের সমবেদনা জানানো, সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়কে চোরাচালানের পণ্য পরিবহন বন্ধ ও মহাসড়কে লাইসেন্সবিহীন কোনো চালককে যানবাহন চালাতে না দেওয়া।
জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় নেতা ও বাসিন্দাদের সঙ্গে তিনিসহ পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন। বৈঠক শেষে আগামীকাল রাতে তারাবিহর নামাজ শেষে আবার বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।
সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক সড়কের দরবস্ত পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের সামনে গতকাল পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হন। তারা হলেন, জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের পশ্চিম ঠাকুরের মাটি গ্রামের সন্তোষ পাত্রের স্ত্রী মঙ্গলী পাত্র (৫০), পুত্রবধূ সুচিতা পাত্র (৩০), নাতনি বিজলী পাত্র (৬ মাস), একই গ্রামের নন্দ পাত্রের স্ত্রী সাবিত্রী পাত্র (৩৫), সুবেন্দ্র পাত্রের মেয়ে ঋতু পাত্র (৮) ও নৃপেন্দ্র পাত্রের স্ত্রী শ্যামলা পাত্র (৫৫)।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জৈন্তাপুরের চিকনাগুল থেকে পাঁচটি লেগুনায় পারিবারিক অনুষ্ঠানে মোকামপুঞ্জির দিকে যাচ্ছিলেন যাত্রীরা। অন্যদিকে জৈন্তাপুরের দরবস্ত বাজার থেকে গরু কিনে হরিপুরের দিকে যাচ্ছিল একটি পিকআপ ভ্যান। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে দুটি গাড়ি দরবস্ত এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় লেগুনাটির একদিকের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে লেগুনায় থাকা ছয় যাত্রী নিহত ও পাঁচ যাত্রী আহত হন।