বছর ঘুরে আবার আসছে পয়লা বৈশাখ। নতুন বছরকে বরণ করে নিতে প্রস্তুতি চলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এবার জগন্নাথের মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল থিম হবে রিকশাচিত্র। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দেয়াল, ভাস্কর্য, ফেস্টুন ও মুখোশে এবার রিকশাচিত্র ফুটিয়ে তোলা হবে।
আয়োজকেরা বলছেন, এবার দুটি বড় প্রতিকৃতিতে দেখা যাবে রিকশা ও কুমির। পুরান ঢাকার ঐতিহ্য হিসেবে রিকশা আর বিলুপ্তপ্রায় কুমির রক্ষার বার্তায় এবার এই দুটো প্রতিকৃতি বেছে নেওয়া।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটির কারণে এ বছর পয়লা বৈশাখে বন্ধ থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়। তাই ১৮ এপ্রিল দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হবে। এবার বর্ষবরণের স্লোগান করা হবে, ‘বৈশাখে নূতন করিনু সৃজন মঙ্গলময় যত তনু-মন’ এবং ‘অন্তর মম বিকশিত করো অন্তরতর হে…’—কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গানের এ অংশ হবে মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্য।
আয়োজকেরা বলেন, সম্প্রতি ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে জাতিসংঘের জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেসকোর স্বীকৃতি লাভ করেছে। ইউনেসকো দেশের যে বিষয়গুলোকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, তার মধ্যে বাংলা বর্ষবরণে মঙ্গল শোভাযাত্রা অন্যতম। বিষয়গুলো সামনে রেখেই এবারের আয়োজন।
এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগ, ভাস্কর্য বিভাগ ও প্রিন্টমেকিং বিভাগের শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। আয়োজকদের প্রত্যাশা ঈদের আগেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করার।
ইতিমধ্যে ক্যাম্পাসের রং নষ্ট হওয়া দেয়ালগুলো রিকশাচিত্রে নতুন হয়ে উঠেছে। রংতুলিতে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বুড়িগঙ্গা নদী, নদীতীরে গড়ে ওঠা সুউচ্চ ভবন, ঘোড়ার গাড়ি, ক্যাম্পাসের পুরোনো প্রশাসনিক ভবন, সবুজ প্রকৃতি ও পশুপাখির নানা রিকশাচিত্র।
চারুকলা অনুষদের ডিন আলপ্তগীন বলেন, পুরান ঢাকার অন্যতম ঐতিহ্য রিকশা ও রিকশাচিত্র। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানও পুরান ঢাকায়। তাই বর্ষবরণের আয়োজনে এবার এই বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মঙ্গল শোভাযাত্রায় বিশাল রিকশার প্রতিকৃতির ভেতরে বসে থাকবে বর ও কনে। শোভাযাত্রার ঐতিহ্য অনুযায়ী ঘুঘু, প্যাঁচা, বাঘ, সিংহ, পশুপাখির মুখোশ থাকবে।