রক্তস্নাত ইউপি নির্বাচন: ব্যর্থতার দায় কার?

সম্পাদকীয়

র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী
র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। ফাইল ছবি

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের প্রথম ধাপ থেকে দ্বিতীয় ধাপ আরও বেশি সংঘাত ও হত্যার মাধ্যমে শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলাবস্থায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটেছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। কোনো কোনো জায়গায় প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে গুলি বিনিময় করেছে প্রার্থীদের সমর্থকরা। বিএনপিসহ আরও কয়েকটি দল বর্জন করায় এ নির্বাচন একদলীয় হয়ে পড়েছে এবং সংঘর্ষগুলোও ঘটছে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ও তাদের বিদ্রোহীদের সমর্থকদের মধ্যে।

এমতাবস্থায় ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, ব্যালট পেপারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, কেন্দ্রের ভেতর ও বাইরে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোসহ আরও অনেক ধরনের বেআইনি কাণ্ড ঘটানো হয়েছে এ নির্বাচনে। এসব ঘটনায় ৪ জেলায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তিন শতাধিক।

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের চিত্র।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বরাবরই কিছুটা উত্তেজনা থাকে। তবে এবার সহিংসতা যে পর্যায়ে চলে গেছে, তা আর সামান্য ঝগড়াঝাটির পর্যায়ে নেই। এটিকে সামান্য ঝগড়াঝাটি হিসেবে আখ্যায়িত করে কোনোভাবেই নিজের ব্যর্থতাকে এড়ানো সম্ভব না। এদিকে নির্বাচনি সহিংসতা বৃদ্ধির কারণ হিসাবে অনেকেই নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিষ্ক্রিয়তাকেই প্রথমত দায়ী করছেন। তারা বলছেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে সংঘাত, বিশৃঙ্খলা ও হতাহতের ঘটনাগুলো ঘটছে, তার দায় ইসি কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। তবে আমরা মনে করি, নির্বাচন কেন্দ্রিক সংঘাত, বিশৃঙ্খলা ও হতাহতের দায় নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিবর্গ ও সংস্থা সমূহও কোনোভাবে এড়াতে পারে না। কেননা ভোটগ্রহণের আগেও ও পরে ঝুঁকি এলাকাসমূহে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকলে নিশ্চয়ই এধরনের সহিংসতার প্রবণতা প্রশমিত করা যেত।

এছাড়া নির্বাচনি আইন ও বিধিমালায় ইসিকে যথেষ্ট ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সহিংসতা রোধে কেন তারা কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। তৃতীয় ধাপের ভোট হবে ২৮ নভেম্বর। আমরা আশা করব, এসব নির্বাচনসহ পরবর্তী সব নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ইসি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

শেয়ার করুন