নবগঠিত নির্বাচন কমিশনকে স্বাগত, জনপ্রত্যাশা পূরণ হোক

সম্পাদকীয়

সিইসি হাবিবুল আউয়াল (মাঝে), রাশিদা সুলতানা (বামে ওপরে), আহসান হাবীব (ডানে ওপরে) খান, মো. আলমগীর (বামে নিচে) ও আনিছুর রহমান (ডানে নিচে)।

আগামী পাঁচ বছর দেশের নির্বাচন কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করবেন কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২৭ ফেব্রুয়ারি শপথ গ্রহণের পর আজ থেকে নির্বাচন কমিশনে অফিস শুরু করেছেন কমিশনাররা। নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্য চার কমিশনারকে আমরা স্বাগত জানাই।

মুক্তিযুদ্ধে পর পঞ্চাশ বছরের মধ্য এবারই প্রথমবারের মতো আইনের মাধ্যমে সার্চ কমিটি গঠিত হয় এবং সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করা হয়। সার্চ কমিটি প্রথম দফায় ৩২২ ও দ্বিতীয় দফায় ৩২৯ জনের নাম বাছাইয়ের পর একাধিক দফায় বৈঠক করে। এসব নাম থেকে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিয়েছিলেন, যার ভিত্তিতে ১৩তম নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের আগ পর্যন্ত দেশে নূরুল হুদা কমিশনসহ ১২টি নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে এবং ১১টি কমিশনের ৩টি ছাড়া ৮টি কমিশন ১০টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করেছে। এসব নির্বাচনের মধ্যে অধিকাংশ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে।

বর্তমান বাস্তবতায় নির্বাচন কমিশন গঠনে এবার যে কমিটি হয়েছে, তারা এখন চাইলে এমন একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে পারেন, যা ভবিষ্যতের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকতে পারে। সেটা করা সম্ভব হলে কেবল আগামী নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্যই নয়, সাংবিধানিক ও আধা সাংবিধানিক পদে এই ধরনের নিয়োগের ক্ষেত্রেও বিশ্বাসযোগ্য বাছাই প্রক্রিয়া বের করতে সেটা সহায়ক হতে পারে। তবে, নির্বাচন কমিশন গঠন সুষ্ঠু হওয়া প্রথম ধাপ মাত্র, তার অধীনে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করাটাই হলো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

একথা সত্য যে, একটি গণতান্ত্রিক দেশে যতটা শক্তিশালী নির্বাচনি ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন, তা গড়ে তুলতে পারিনি আমরা। এ অবস্থায় স্বাধীন, দৃঢ়চেতা এবং যে কোনো অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার মানসিকতাসম্পন্ন নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন, তা বলাই বাহুল্য। আশার কথা, নতুন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বিরাজমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে বলেছেন, সব দলকে নির্বাচনমুখী করাই হবে তার কমিশনের মূল লক্ষ্য। এ কাজে নবগঠিত নির্বাচন কমিশন কতটা সফল হয়, এটাই এখন দেখার বিষয়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে নবগঠিত নির্বাচন কমিশন- তবেই পূরণ হবে জনপ্রত্যাশা।

শেয়ার করুন