শ্রমিকদের জন্য সরকার এতোকিছু করার পরও কিছু নেতা আছেন, বিদেশিদের কাছে তারা নালিশ করতে পছন্দ করেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জানি না শ্রমিকদের এখানে কোনো স্বার্থ আছে কিনা। নিজের দেশের বিরুদ্ধে অন্যের কাছে না বলে, কোনো দাবি-দাওয়া থাকলে আমাকে জানান।
মহান মে দিবস উপলক্ষে আজ রোববার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর তনয়া ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। তিনি উন্নয়ন ও দেশের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে শ্রমিক ও মালিকদের একে অপরের প্রতি দায়িত্বশীল ও পরিপূরক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
একটানা দেশের তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শ্রমিকদের কল্যাণে যে তহবিল রয়েছে, সেখানে অনেক শিল্প মালিক ঠিক মতো টাকা দেন না। এটা দুঃখজনক। যে কোনো প্রতিষ্ঠান চালাতে গেলে মালিকের যেমন শ্রমিকের ওপর দায়িত্ব থাকবে, তেমনি শ্রমিকেরও মালিকের ওপর দায়িত্ব থাকবে। শ্রমিকরা সুস্থ পরিবেশ পাচ্ছে কিনা, সেটা মালিকদেরকে দেখতে হবে। তাতে উৎপাদনও বাড়বে, মালিক-শ্রমিক উভয়ই লাভবান হবে।
তিনি বলেন, কোনো একটি কারখানা তৈরি হলে সেখানে মালিক পুঁজি দেন আর শ্রমিক শ্রম দেন। মালিকের পুঁজি ও শ্রমিকের শ্রম নিয়েই কারখানা চালু থাকে। উৎপাদন বাড়ে ও দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধশালী হয়।
সমস্যার সৃষ্টি হলে অহেতুক বিদেশিদের পেছনে না ছুটে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধানের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, শ্রমিক, দিনমজুর তথা খেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করার জন্যই আমাদের রাজনীতি। আমরা মানুষের কথা ভাবি, মানুষের কল্যাণে কাজ করি।
শ্রমিকের মুখে হাসি না ফুটলে শান্তি নেই জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, শ্রমিকদের ভাগ্যোন্নয়নে সবসময়ই চেষ্টা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। গবিব কৃষক ও শ্রমিকের মুখে যতোদিন হাসি না ফুটবে, ততোদিন আমার মনে শান্তি নেই।
আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, এ দেশের শ্রমিক, কৃষক, মেহেনতি জনতার ভাগ্য পরিবর্তনে এবং জাতির পিতার যে আকাঙ্খা এ দেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো- সে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমাদের দেশকে উন্নত করার ক্ষেত্রে এই শ্রমিক শ্রেণির অবদান সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক না থাকলে কখনই উন্নয়ন হয় না।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুজিবুল হক, বাংলাদেশে আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পটিয়ানেন বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে ও এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি আর্দাশির কবির মালিক পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডের ওপর একটি ভিডিও চিত্র পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ১০ শ্রমিক পরিবারের মধ্যে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তার চেকও বিতরণ করেন।