আগ্রাসন শুরুর পর ইউক্রেনে গত দুই দিনে সবচেয়ে বেশি হামলা চালালো রাশিয়া। একের পর এক দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে কেঁপে ওঠে ইউক্রেনের রাজধানীসহ বিভিন্ন শহর। দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে কেএইচ–১০১ ক্যালিবারের মতো অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মিত্র কিয়েভকে ‘যতদিন লাগে সমর্থন’ করার জোরালো প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংস্থা গ্রুপ অব সেভেনের (জি-৭) নেতারা।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) জরুরি ভার্চুয়ালি বৈঠকে বসেন জি-৭ নেতারা। বৈঠকে ইউক্রেনকে মানবিক ও সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়ে একমত হন তারা। বৈঠকে যুক্ত হন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও। তিনি আরো অত্যাধুনিক অস্ত্র সহায়তা চেয়েছেন বৈঠকে।
ন্যাটোর তরফেও জানানো হয়, যতদিন প্রয়োজন তারা ইউক্রেনের পক্ষে দাঁড়াবে।
সম্প্রতি ইউক্রেনে রাশিয়ার বৃষ্টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো অনেক মানুষ। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আগ্রাসনের পর প্রথমবারের মতো কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো প্রেসিডেন্ট পুতিনের সরকার। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ক্রিমিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সেতুতে হামলার প্রতিশোধ নিতেই ইউক্রেনজুড়ে রুশ বাহিনীর হামলা শুরু হয়েছে। রাশিয়া ও ক্রিমিয়ার সংযোগ সেতুতে শনিবারের ওই বিস্ফোরণের জন্য পুতিন ইউক্রেনকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ করেন এবং এই ‘সন্ত্রাসী হামলার’ জেরে ইউক্রেনে রুশ হামলা আরো জোরদার করার হুমকিও দেন।
পশ্চিমা নেতারা রাশিয়ার এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং মঙ্গলবার জি-৭ নেতারা ইউক্রেনের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি আবারও পুনর্ব্যক্ত করলেন।
এক বিবৃতিতে তারা বলেছেন, ‘আমরা আর্থিক, মানবিক, সামরিক, কূটনৈতিক ও আইনি সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবো। ইউক্রেনকে যতদিন প্রয়োজন সমর্থন করে যাবো’। গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল পুতিন সরকার নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার বিষয়টিরও তীব্র নিন্দা জানান তারা।
অর্থনৈতিক দিক থেকে উন্নত সাতটি দেশ কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি ও জাপান নিয়ে গঠিত এই জি-৭।
এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে একটি যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে কিয়েভে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন বলেছেন, রাশিয়া সন্ত্রাস ও বর্বরতার পক্ষে দাঁড়িয়েছে।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ ইউক্রেনকে আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জো বাইডেন বলেছেন, এটি বর্বরতা ও নৃসংশতা। প্রেসিডেন্ট পুতিনের অনৈতিক যুদ্ধ এটি।
সূত্র: বিবিসি