উত্তাপ ‘আপাতত’ শীতল করেছেন বাইডেন-সি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

শি জিনপিং-বাইডেন
শি জিনপিং-বাইডেন। ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের (শি জিনপিং) মধ্যে বৈঠকের পর বিশ্ব এখন ‘একটু সহজে নি:শ্বাস’ নিতে পারে। সিএনএনের স্টিফেন কলিনসনের এক বিশ্লেষণে এমনটাই বলা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে গতকাল সোমবার বিকেলে বাইডেন ও সি বৈঠক করেন। বৈঠকে দুইনেতা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে চলমান বিরোধ কমিয়ে আনতে ঐকমত্যে পৌঁছান।

সিএনএনের বিশ্লেষণে বলা হয়, বৈঠকের মধ্য দিয়ে বাইডেন ও সি আপাতত দুইদেশের মধ্যকার সম্পর্কের উত্তপ্ত অবস্থাকে শীতল করেছেন। তবে একবিংশ শতাব্দির এ দুই পরাশক্তি এখনো সংঘাতের পথে। বাইডেন-সির মধ্যে তিন ঘণ্টা বৈঠক হয়। বৈঠকের দুটি ফল গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের ভাষ্যমতে, রাশিয়া অবশ্যই ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না—এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একটি যৌথ অবস্থান নিয়েছে।

universel cardiac hospital

দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হলো, জলবায়ু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রত্যাশিত আলোচনা পুনরায় শুরু করা। বিষয়টি মিসরে চলমান বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক খবর। বাইডেন বৈঠকে জোর দিয়ে সিকে বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক কার্যকলাপ রোধে বেইজিংয়ের একটি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। উত্তর কোরিয়ার এ কার্যকলাপ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য ক্ষতিকর।

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী দুইনেতা সাম্প্রতিক মাসগুলোয় এ সমস্যাগুলো নিয়ে একসঙ্গে বসেননি, আলোচনা করেননি। যার পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াশিংটন ও বেইজিং পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে, তখন পুরো বিশ্ব কীভাবে ভোগান্তির মুখে পড়ে, তা স্পষ্ট হয়ে যায়। বাইডেন-সির বৈঠকের পর উভয় পক্ষ থেকে প্রকাশ্য বিবৃতি দেওয়া হয়। এতে একটি মৌলিক দিক নির্দেশিত হয়। তা হলো, উভয় দেশ তাদের মধ্যকার বিরোধের গুরুতর প্রকৃতিকে স্বীকার করে নেয়। বিরোধ যাতে সংঘাতে রূপ না নেয়, সে জন্য উভয় দেশ একসঙ্গে কাজ করতে একমত হয়েছে।

এখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন আরও নিয়মিত আলাপ-আলোচনা পুনরায় শুরুর পথে হাঁটতে যাচ্ছে, যার অংশ হিসেবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আগামী বছর চীন সফর করবেন। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি গত আগস্ট মাসে তাইওয়ান সফর করেন। পেলোসির এ সফর চীনকে ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ করে। তারা তাইওয়ান ঘিরে বড় ধরনের সামরিক মহড়া চালায়। পেলোসির সফরের পর যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের শীর্ষ কর্মকর্তা পর্যায়ের সফর স্থগিত হয়ে যায়।

বাইডেন বহু বছর ধরে সিকে চেনেন। তাই তাঁর সঙ্গে সির যোগাযোগের চ্যানেল চালু থাকা এখন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, সি এখন চীনা রাষ্ট্রের সমার্থক হয়ে উঠেছেন। তিনি চীনের সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী। তাঁর চিন্তাধারা চীনের সরকারি মতাদর্শ হয়ে উঠেছে। ইউক্রেন ইস্যুতে পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার অচলাবস্থা যে এতটা বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে গেছে, তার একটি কারণ হলো নেতাদের মধ্যে এ ধরনের যোগাযোগের অভাব।

শেয়ার করুন