ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর যে অবদান আছে, সেটি স্পষ্ট। যদি তথ্যগুলো আমরা বের না করতাম আর জাতির পিতার লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ যদি বের না হতো তাহলে… ভাষা আন্দোলন থেকে তাঁকে তো মুছেই ফেলা হয়েছিল। নামটাই মুছে ফেলা, এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য। যখনই যে কাজ করেছেন, তখনই ইতিহাস থেকে তাঁর নামটা মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৩’ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের অনেক তথ্য আপনারা পাবেন, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা যেসব রিপোর্ট দিয়েছিল সেখানে। আমি ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে সমস্ত রিপোর্ট সংগ্রহ করি। সেগুলো কপি করে আমাদের কাছে রাখি। আমাকে সহযোগিতা করেন আমার বান্ধবী বেবী মওদুদ। প্রায় ২০টা বছর আমরা এর ওপরে কাজ করি, প্রত্যেকটা ফাইল আমরা দেখি। দ্বিতীয়বার যখন আমি ক্ষমতায় আসি, তখন সিদ্ধান্ত নিই এগুলো প্রকাশ করব। পৃথিবীতে কোনো নেতার ওপর কোনো রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। আমাদের এই রিপোর্টটাই সর্বপ্রথম আমি প্রকাশ করলাম।
সরকারপ্রধান বলেন, আমি অনেক নেতার ফাইল এনেছি, দেখেছি। কারও হয়তো একটা ফাইলের বেশি কিছু নেই। আর এখানে ৪৮টি ফাইল, ৪৬ হাজার পৃষ্ঠা। আমি যখন এটার এডিট করি, অনেক কিছু বাদ দিয়ে মূল যে তথ্যগুলো সেখানে নিয়ে এসেছি। তাতেও ১৪ খণ্ড হচ্ছে। ১১ খণ্ড এরই মধ্যে ছাপা হয়ে গেছে। ১২ নম্বরটাও ছাপতে দেওয়া হয়েছে। ১৩ নম্বরটা এডিট করে দিয়ে দিয়েছি, আর ১৪ নম্বরটা করব। ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর যে অবদান, সেই কথাটা কিন্তু স্পষ্ট এখানে আছে। যদি এই তথ্যগুলো আমরা বের না করতাম, আর জাতির পিতার লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী যদি বের না হতো তাহলে… তাঁকে তো ভাষা আন্দোলন থেকে মুছেই ফেলা হয়েছিল।
আলোচনা সভার শুরুতে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আরও বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সাদেকা হালিম, চলচ্চিত্র অভিনেতা নায়ক ফেরদৌস আহমেদ, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, কার্যনিবাহী কমিটির সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
আলোচনা সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ।