খাদ্যশস্য মজুত ১৬ লাখ টনের বেশি: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, দেশে বর্তমানে (২৪ মে ২০২৩) ১৬ দশমিক ২৭ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। এর মধ্যে চাল ১২ দশমিক ২৫ লাখ টন, গম ৩ দশমিক ৯৬ লাখ টন এবং ধান ৯ হাজার টন। আজ বুধবার জাতীয় সংসদের সরকারি দলের সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব তথ্য জানান।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও জানান, খাদ্য মজুত বাড়াতে বর্তমান বোরো সংগ্রহ মৌসুমে ৪ লাখ টন ধান ও ১২ দশমিক ৫০ টন চালসহ চাল আকারে সর্বমোট ১৫ দশমিক ১০ লাখ টন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ টন নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংসদ নেতা শেখ হাসিনা জানান, খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত (২৩ মে ২০২৩) ৬ দশমিক ৩৪ লাখ টন চাল ও ৬ দশমিক ৮০ টন গম আমদানি করা হয়েছে।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, দেশের নতুন নতুন এলকায় ভূতাত্ত্বিক জরিপ ও সিসমিক সার্ভে কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩২ হাজার ৫৮১ লাইন কিমি ২ডি এবং ৬ হাজার ২২২ বর্গকিলোমিটার ৩ডি সিসমিক সার্ভে সম্পন্ন হয়েছে। এ সময়ে ২০টি অনুসন্ধান কূপ, ৫৪টি উন্নয়ন কূপসহ ৭৪টি কূপ খনন এবং ৪১টি কূপে ওয়ার্কওভার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। ফলে ছয়টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। দেশে এ পর্যন্ত খননকৃত অনুসন্ধান কূপের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ বর্তমান সরকারের আমলে হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, নতুন আবিষ্কৃত ভোলার ইলিশার গ্যাস মজুতসহ বর্তমানে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুত ২৮ দশমিক ৭৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, বর্তমানে বিশ্বের ১৭৪টি দেশে ১ কোটি ২০ লাখ প্রবাসী কর্মী কর্মরত রয়েছেন। সরকারের অব্যাহত চেষ্টা, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপের কারণে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে ৩ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৩ জন কর্মী বৈদেশিক কর্মসংস্থানে নিয়োজিত হয়েছেন এবং ২৬ মে পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশে বৈধ চ্যানেলে প্রায় ৮৬ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের ফলে ২০২৬ সালের পর ভারতে পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা পাবে না। এতে ভারতে পণ্য রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এ বিষয়টি বিবেচনা করে ভারতের সঙ্গে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সিইপিএ) সম্পাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি এখনো আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। সিইপিএ স্বাক্ষরিত হলে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি ১৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে জিডিপি ১ দশমিক ৭২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের পার্টনারশিপের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা তুলে ধরেন।

ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার কথা উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, বক্তব্যে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পে উদ্দেশপ্রণোদিতভাবে বিশ্বব্যাংকের মিথ্যা অভিযোগের বিষয়ে আবারও অসন্তোষ প্রকাশ করি এবং দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের মর্যাদাহানিকর কোনো হীন উদ্দেশ্যকে আমি কখনোই প্রশ্রয় দেব না বলে উল্লেখ করি। বক্তব্যের পর আমি বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টকে পদ্মা সেতুর বাঁধাই করা একটি চিত্রকর্ম উপহার প্রদান করি। বিশ্বব্যাংক আমাদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছিল, তারা তা বুঝতে পেরেছে।

শেয়ার করুন