জামালপুরের বকশীগঞ্জে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে নিহত সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে গ্রামের বাড়ি নিলাখিয়া ইউনিয়নের গোমেরচর ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে বকশীগঞ্জ পৌর শহরের নূর মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জামালপুর প্রেস ক্লাব, অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, জামালপুর টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন গোলাম রব্বানী নাদিমের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
শত শত জনসাধারণসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিক এবং পার্শ্ববর্তী জেলা-উপজেলার সাংবাদিকরা জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। জানাজার শুরুতে নাদিমের জীবনকর্ম নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন পরিবারের আত্মীয়, স্থানীয় সুধীজন ও সাংবাদিক নেতারা।
জামালপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা বলেন, তারা কেন খুনিদের চিনেও নাম বলেন না। আমরা আমাদের একজন সহকর্মী হারিয়েছি, নাদিম সত্য প্রকাশ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। তার রক্ত বৃথা যেতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, খুনি মাহমুদুল আলম বাবু চেয়ারম্যানসহ সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা পর্যন্ত সাংবাদিকরা ঘরে ফিরে যাবেন না।
দাফন শেষে সব সাংবাদিক বকশীগঞ্জ থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত খুনিদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির মুখোমুখি করার আহ্বান জানান।
এর আগে বুধবার রাতে অফিসের কাজ শেষে রাত ১০টার দিকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম ও তার সহকর্মী আল মুজাহিদ বাবু। পথে বকশীগঞ্জ পাটহাটি পৌঁছালে সামনে থেকে অতর্কিত আঘাত করে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে তাকে ফেলে দেওয়া হয়।
এরপর দেশীয় অস্ত্রধারী ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত তাকে সড়ক থেকে মারধর করতে করতে টেনেহিঁচড়ে অন্ধকার গলিতে নিয়ে যায় এবং তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় নাদিমকে প্রথমে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নাদিমের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়।
জানাজায় অংশ নিয়ে বকশীগঞ্জ থানার ওসি সোহেল রানা বলেন, ইতোমধ্যেই ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলায় জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হলে দ্রুত সময়ে তদন্ত করে সব আসামিকে গ্রেপ্তার করা হবে।