ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন চারতলা ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী একাডেমিক ভবন’-এর শুভ উদ্বোধন করেছেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
আজ শনিবার সকালে তিনি নতুন একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন করেন। ভবনটির উদ্বোধন শেষে নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এস.এম. আর ওসমান গণির সভাপতিত্বে অভিভাবক সমাবেশ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
সন্তানদেরকে সমাজের সৎ ও ভালো মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়ে অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, আমার সন্তান যদি না জানে, সৎ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা দরকার, তাহলে তো সে সৎ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না। বর্তমানে সমাজে টাউট বাটপার ভরে গেছে। এই অবস্থায় আপনার সন্তানদের পক্ষে সঠিক মানুষ বাছাই করা কঠিন। সুতরাং এই বাছাই করার কাজটা আপনারা আপনাদের সন্তানদের শিখাবেন। এছাড়া কোনো পথ নাই। আপনি যদি এটি শিখাতে পারেন তবেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া ভালো হবে। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া যদি ভালো হয়, তাহলে বাংলাদেশও ভালো হবে। আর বাংলাদেশটা ভালো হলেই ‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই’ এই মর্মবাণী সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, সমাজে সৎ মানুষের দরকার রয়েছে এইজন্য, কারণ সৎ মানুষ ছাড়া পৃথিবীর উন্নয়ন হয় না, পৃথিবীর অগ্রযাত্রা হয় না। সৎ মানুষ সবসময় চিন্তা করে, ‘শুধু আমি নয়, আমার পুরো পরিবেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন সাংবাদিক মুহাম্মদ মূসা। তিনি সারা শহর ঘুরে বেড়াতেন, পারত পক্ষে রিক্সায় চড়ার চেষ্টা করেননি। হেঁটে হেঁটে চলতেন। তাঁর মতো মানুষ কত জন এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আছে? খুঁজে পাওয়া কঠিন। আজ তিনি প্রয়াত। আমি অভিভাবকদের বলবো, আপনারা মূসা সাহেবের মতো সৎ ও ভালো মানুষদের সন্ধান করুন এবং তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলুন। ভালো মানুষদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলেই আপনি ভালো মানুষ হবেন। আর খারাপ মানুষদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়লে আপনারাও খারাপ মানুষ হয়ে যাবেন।
তিনি বলেন, একসময় বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। আর সেজন্য বাংলাদেশের জন্মের ক্ষেত্রে প্রধানতম ব্যক্তিত্ব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। কেননা শেখ মুজিব থাকলে বাংলাদেশ থাকবে, এরকম একটা ধারণা হয়ে গিয়েছিল তাদের। কিন্তু তারা জানত না যে, শেখ মুজিব ছাড়াও বাংলাদেশ থাকতে পারে, কেননা তিনি অগণিত শেখ মুজিব রেখে গিয়েছিলেন, যারা বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখতে জানে।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, শুধু তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার কথা বলছি না। শেখ হাসিনা যখন দেশে আসেন নাই, তিনি যখন কোনো নির্দেশ দেন নাই, তখনও বাংলাদেশে শেখ মুজিবের পক্ষে উচ্চ কণ্ঠে কথা বলা হয়েছে।