খ্রিষ্টীয় নববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে থার্টি ফার্স্ট নাইটে ঢাকা মহানগরীতে ফানুস উড়ানো ও আতশবাজি না করতে নির্দেশনা দিয়েছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। কিন্তু বরাবরের মতো সেই নির্দেশনা কাজে আসেনি। রোববার (৩১ ডিসেম্বর) রাত ১১টার পর থেকেই ঢাকার আকাশে আলোর ঝলকানি শুরু হয়। রাত ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে আতশবাজির বর্ণিল আলোতে আলোকিত ছিল ঢাকার আকাশ। তবে মুহুর্মুহু কান ফাটানো শব্দে বিরক্ত হয়েছেন রাজধানীর বাসিন্দারা। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়াতে তাদের বিরক্তির কথা প্রকাশ করেছেন।
কয়েক বছর ধরেই খ্রিষ্টীয় নববর্ষ উদ্যাপনের রাতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আতশবাজি না করতে ও ফানুস না ওড়াতে নির্দেশনা দিয়ে আসছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর আগে ফানুস ওড়ানো ও আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। গত বছর মেট্রোরেলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফানুসে। ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, ২০২২ সালের থার্টি ফাস্ট নাইটে আতশবাজি ও ফানুস উড়ানোর কারণে প্রায় ১০০টি স্থানে আগুনের ঘটনা ঘটে।
এসব বিষয় মাথায় রেখেই এবার কঠোর অবস্থানে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ফানুস ওড়ানো ও আতশবাজি কিংবা বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরা পড়লেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করে ডিএমপি। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষও এবার ফানুস না ওড়াতে অনুরোধ করে।
বিভিন্ন সংগঠন থেকেও আতশবাজি না করার অনুরোধ করে প্রচার চালানো হয়। পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন (পি’ ফাউন্ডেশন), সেভ দ্য নেচার অব বাংলাদেশ, ওয়াইল্ড ওয়াচ, স্টেলা ফাউন্ডেশন, সেভ ফিউচার বাংলাদেশ গত শুক্রবার এক সমাবেশে জানায়, আতশবাজি বা পটকাবাজি মূলত তিন ধরনের ক্ষতি করে। এগুলো ফুটানোর সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দ হয়, যা চারদিকে শব্দদূষণ ঘটায়। এই শব্দ শিশু, বৃদ্ধসহ রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এতে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা থাকে। আতশবাজির শব্দে প্রাণীরা চমকে ওঠে। এ কারণে প্রতিবছর হাজারো পাখি ও বন্যপ্রাণী অসুস্থ হয়ে মারা যায়। পথে থাকা কুকুর–বিড়াল ভয়ে ছোটাছুটি করে, আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তা ছাড়া এ থেকে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে মারাত্মক বায়ু দূষণ ঘটায়, যা ফুসফুসের নানা রোগের কারণ।
কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হয়নি। খ্রিষ্টীয় নতুন বছরকে বরণ করে নিতে রাত ১২টায় একযোগে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ছাদ থেকে আতশবাজি পোড়ানো হয়। ওড়ানো হয় ফানুস। রাজধানীর সব এলাকার আকাশ ভরে ওঠে বর্ণিল আলোয়।