রোহিঙ্গা নিপীড়নের কোনো প্রমাণ নেই!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে ‘একঘরে’ করার আহ্বান জাতিসংঘের
মিয়ানমারের সেনাপ্রধান। ছবি : ইন্টারনেট

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের কোনো প্রমাণ নেই বলে দাবি করেছেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং।

জাপানের গণমাধ্যম আশাহি শিম্বুনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শুক্রবার এমন দাবি করেন তিনি। ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাদের হাতে নির্যাতিত হয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় দশ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা।

এরপর এই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিলেন তিনি।

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা সংঘটনের অভিযোগে দেশটির সেনাপ্রধান ও অপর পাঁচ শীর্ষ সেনা কমান্ডারকে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের তদন্তকারীরা৷ তার জবাবেই এই দাবি করেন মিয়ানমার সেনাপ্রধান৷ খবর ডয়চে ভেলের।

শুধু তাই নয়, মিয়ানমারের সেনাপ্রধান দাবি করেন, বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া শরণার্থীরা যা মন চায় তাই বলেছে৷ কোনো প্রমাণ ছাড়া বিশ্ববাসী মিয়ানমারের যে সমালোচনা ও নিন্দা করছে এটি মিয়ানমারের জন্য অসম্মানজনক।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক বাহিনীর অভিযানের কারণ জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমার সেনা ঘাঁটিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা করে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা৷ তাদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যেই অভিযান চালানো হয়েছিল৷ নিপীড়ন করা হয়নি৷

এদিকে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্ডি জানিয়েছেন, তিনি মিয়ানমারের সেনা প্রধানের কোনো সাক্ষাৎকার দেখেননি৷ তবে গত বছর জাতিসংঘের সঙ্গে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে মিয়ানমার সরকার৷ সেখানে রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিষয়টি স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে৷ রোহিঙ্গাদের নিজ আবাসে ফিরে যাওয়ার পূর্ণ অধিকারের বিষয়েও সম্মতি প্রকাশ করেছে মিয়ানমার৷

তিনি আরও বলেন, আমরা রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি৷ এটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য৷ কারো ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার বিবেচনার বিষয় নয়৷

রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা, ধর্ষণসহ নারকীয় সব অত্যাচার চালিয়েছে মিয়ানমার সেনারা। ওই ভয়াবহ অত্যাচার থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে দশ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার তদন্তে উঠে এসেছে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাদের নির্যাতনের চিত্র।

বাংলাদেশে পালিয়ে আসার কয়েকমাস পর থেকে হাজার হাজার সন্তান প্রসব করেছে রোহিঙ্গা নারীরা। এসব সন্তান মূলত তাদের ধর্ষণের কারণে জন্ম নিয়েছে। এছাড়া বসতবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়াসহ অকথ্য সব নির্যাতনের চিত্র শরীরে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন বেশিরভাগ রোহিঙ্গা। এরপরও রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের কথা বিভিন্ন সময় অস্বীকার করে এসেছে মিয়ানমার।

দেশটির কার্যত সরকার প্রধান অং সাং সুচি আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন। এরই মধ্যে তাকে দেয়া বিভিন্ন সম্মানজনক পদক ও উপাধি তুলে নিয়েছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ও সংস্থা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে