ট্রাইব্যুনাল একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তিন শর্তে আসামির জামিন দিয়েছেন। সেই আসামি হলেন নড়াইলের গোলজার হোসেন খান (৮০)।
তিন শর্ত হলো- রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সঙ্গে কোনোরূপ যোগাযোগ রক্ষা করা যাবে না, ঢাকায় নিকটাত্মীয়ের বাসায় থাকতে হবে এবং নিয়মিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দিতে হবে।
ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি মো. শাহীনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আমীর হোসেন ও বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার।
আদালতে আজ বুধবার জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান। রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। প্রসিকিউটর মো. সাহিদুর রহমানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান আসামি গোলজার হোসেন খানের জামিনের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
এর আগে একই মামলায় অপর আসামি মো. বদরুদ্দোজার জামিন মঞ্জুর করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। তিনি এখনও জামিনে রয়েছেন। ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মো. শাহীনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ওই আদেশ দেন।
আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান জানান, দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়ে আসামির পা ভেঙে যায়। তিনি অন্যের সহযোগিতা ছাড়া চলাচল করতে পারেন না। এ কারণে তাকে জামিন দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
জামিনের শর্ত পালন করা না হলে তার জামিন বাতিল করা হবে বলেও জানান তিনি।
ওই মামলায় মোট আসামি ১২ জন। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আগামী ৩০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। ১২ আসামির মধ্যে পাঁচজন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ছিলেন। তারা হলেন- আব্দুল ওয়াহাব, ওমর আলী শেখ, মো. বদরুদ্দোজা, গুলজার খান ও দাউদ শেখ। বাকি সাতজন পলাতক।
ওই সাত আসামিকে আত্মসমর্পণের জন্য ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ওই আদেশ কার্যকর করে একই বছরের ৬ আগস্ট পত্রিকা দুটি ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করে প্রসিকিউশন।
২০১৭ সালের ৩ নভেম্বর ওই ১২ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়। পরবর্তীতে ২৬ ডিসেম্বর তা আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আছে।