মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের ‘এলিট ফোর্স’ হিসেবে পরিচিত রেভ্যুলেশনারি গার্ডকে (আইআরজিসি) বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভৃক্ত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো কোনো দেশ অন্য দেশের সামরিক বাহিনীকে আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিল।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলেশনারি গার্ড কোর্পস বা আইআরজিসি’র প্রাথমিক অর্থ হলো এর মাধমে দেশটির ‘বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদী ক্যাম্পেইনে’র বাস্তবায়ন করা।
২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে করা ছয় পরাশক্তির পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে আসা পর থেকে ওয়াশিংটন-তেহরান সম্পর্কের পতন হতে থাকে। তারপর থেকে ইরানের ওপর নানারকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটির অর্থনীতিকে নাজুক অবস্থায় নিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আজ সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে এই অভূতপূর্ব পদক্ষেপের মাধ্যমে যে সত্যটাকে স্বীকৃতি দেয়া হলো তা হচ্ছে, শুধুমাত্র ইরান সন্ত্রাসবাদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষক নয় তাদের আইআরজিসি সক্রিয়ভাবে এতে অংশগ্রহণ, অর্থায়নের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদকে রাষ্ট্র পরিচালনার একটি অস্ত্র হিসেবে প্রচার চালায়।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন অনেকেই। কোনো দেশের সেনাবাহিনীকে সন্ত্রাসী বলে আখ্যা দেয়ার এই সিদ্ধান্ত শেষে মার্কিন সেনাবাহিনী ও দেশটির গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জন্য বুমেরাং হবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। দেখা যাবে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি নাখোশ রাষ্ট্রগুলোও একই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। গত শনিবার মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনের তিনজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছিল, সোমবার প্রথম প্রহরেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে রয়টার্সে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ট্রাম্প প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের জবাব দেয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে ইরান। দেশটির ২৯০ এমপির মধ্যে ২৫৫ জন এক বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছে, আমাদের এই বাহিনীর বিরুদ্ধে যদি কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় তাহলে তার সম্পূরক জবাব হিসেবে পাল্টা পদক্ষেপের মাধ্যমে কড়া জবাব দেব আমরা।