আবারো জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয় শ্রীলঙ্কায়। এরই মধ্যে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালিয়ে কলম্বোর পার্শ্ববর্তী এক মসজিদ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেছে সে দেশের পুলিশ।
৪৭টি তরবারি, সেনাবাহিনীর পোষাক, আত্মঘাতী হামলা চালানোর জ্যাকেট ও চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে মসজিদ থেকে।
শ্রীলঙ্কার স্লেভ আইল্যান্ডের যে মসজিদ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানকার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। সেই মসজিদের প্রধান ইমামের বিছানার নিচ থেকে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, তরবারির সঙ্গে সেখান থেকে ১৫টি চাপাতি এবং সেনাবাহিনীর ২৫টি জ্যাকেট পাওয়া গেছে। অস্ত্র উদ্ধারের সময় সন্দেহভাজন একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
তবে ওই ব্যক্তি ইস্টার সানডের দিন হামলার সঙ্গে জড়িত কিনা, সে ব্যাপারে কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।
এদিকে কলম্বো থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে বালাঙ্গোদা এলাকা থেকে এক তরুণকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, সে দেশের পার্লামেন্টে হামলার পরিকল্পনা ছিল ওই তরুণের। সেই তরুণ গোলাবারুদ নিয়ে পার্লামেন্টে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। তার কাছ থেকে পার্লামেন্টের মানচিত্রও উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে ওই তরুণের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে কোনো ধরনের বিস্ফোরক পায়নি পুলিশ।
এছাড়া একটি আদালত ভবনের বাইরে ডাস্টবিন থেকে ব্যাগ ভর্তি গান পাউডার উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, এ ধরনের কার্যক্রম ইসলামিক স্টেট (আইএস) কিংবা অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা করছে। তবে ইস্টার সানডের দিনের হামলার মধ্য দিয়ে সে দেশে হামলার শঙ্কা ফুরিয়ে যায়নি।
এর আগে গত ২১ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার তিনটি চার্চ এবং তিনটি হোটেলে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়। এতে অন্তত দুইশ ৫৩ জন নিহত হয়। ওই হামলায় সে দেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে টার্গেট করা হয়।
সে দেশের জনসংখ্যার সাত শতাংশ ক্যাথলিক খ্রিস্টান। প্রায় সমান সংখ্যক ইসলাম ধর্মাবলম্বী এবং বেশিরভাগ মানুষ বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে হামলার পেছনে সে দেশের জিহাদি গোষ্ঠী তাওহীদ জামায়াতকে চিহ্নিত করে। যদিও হামলার দায় স্বীকার করে আত্মঘাতী হামলাকারীদের পরিচয় প্রকাশ করেছে আইএস।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা জানিয়েছেন, ইস্টার সানডের দিন সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় দুইশ ৫০ জনের বেশি নিহত ও একশ ৪০ জন আহতের পর জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ৭০ জনকে আটক করা হয়েছে।