কেরানীগঞ্জে আদালত স্থাপনকে ‘ষড়যন্ত্র’ অভিহিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, খালেদা জিয়া এখন পর্যন্ত মুক্তি পান নাই সরকারের বিভিন্ন কলাকৌশল ও বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কারণে। এখন নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে হাসপাতাল থেকে তাকে (খালেদা জিয়া) এখন কেরানীগঞ্জের কারাগারে নিয়ে যাওয়ার। কারণ সরকার চায় না খালেদা জিয়া মুক্ত হোক।
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, আইনজ্ঞরা আইনতভাবে যতটুকু করা সম্ভবপর আমরা করছি। কিন্তু সরকারের কূটকৌশলের কারণে আমরা সফল হতে পারছি না। তারপরেও এই আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে এবং তার সঙ্গে সঙ্গে আমাদেরকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি অর্জন করা সম্ভবপর হবে না।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সু-চিকিৎসা, নিঃশর্ত মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে’ এই কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।
মওদুদ আহমদ বলেন, কেরানীগঞ্জে আদালত স্থাপন সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। আমরা মনে করি, সংবিধানে যে মৌলিক অধিকার একজন নাগরিককে দেয়া হয়েছে তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। খুব শিগগিরই সুপ্রিম কোর্টে এই কেরানীগঞ্জে আদালত স্থাপনার বৈধ্যতা নিয়ে আমরা চ্যালেঞ্জ করব। এটা করতেই থাকব। কারণ আমাদের অন্য কোনো উপায় নাই। আমরা লড়ে যাব। আদালতেও লড়ব, রাজপথেও লড়ব।
তিনি বলেন, আমরা কেরানীগঞ্জ গিয়ে দেখে এসেছি। কী নির্জন একটা অবস্থান সেখানে। কেরানীগঞ্জ একটা উপজেলা। সেখানে কোনো সুযোগ-সুবিধা নাই। ন্যায় বিচার পাওয়ার মতো আদালতের যে পরিবেশ থাকার প্রয়োজন, সেই ধরনের কোনো পরিবেশ সেখানে নাই। বই-পুস্তক নাই, লাইব্রেরি নাই। সেখানে আইনজীবীদের যাওয়া আসা যে চরম দুর্ভোগ-এটা অবশ্যই বুঝতে পারছেন।
মওদুদ বলেন, ঘটনা ঘটবে এখানে, কিন্তু সেখানে বিচার হবে। সাধারণ মানুষের কাছেও এটা অত্যন্ত সহজ যে, যেখানে ঘটনা ঘটে আইনে বলে সেখানে বিচার হতে হবে। কিন্তু কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে কেরানীগঞ্জে আদালত স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, চকবাজরের একটা পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে খালেদা জিয়া একাকী জীবনযাপন করেছেন। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার এই অসুস্থতা, তার শরীরের এই অবণতির জন্য সরকারকে দায়ী করব আমরা। দেশের মানুষ মনে করে এই সরকারই দায়ী।
মওদুদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষ চায় বেগম জিয়া মুক্ত হোক। আজকে হোক না হয় কালকে হোক তিনি অবশ্যই মুক্ত হবেন। দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই পেশাজীবী ভাইদের বলি সুদান থেকে শিক্ষা নিন। যেদিন খালেদা জিয়া জেলে গেল সেদিন ঢাকা শহরের দৃশ্য আপনাদের মনে আছে। হাজার হাজার তরুণ-যুবক মানুষ মিছিল করে তার গাড়ির বহরে এক এক করে ওই আদালত পর্যন্ত নিয়ে গেছে। ওই মানুষ চাই, রাজপথে চাই। প্রতিবাদী মানুষ চাই।
তিনি বলেন, প্রমাণ হয়েছে যখন সংসদে যোগ দিয়েছিলেন তখন সারা দেশের মানুষ মনে করেছিলেন হয়ত এর বদলে খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন। কিন্তু তিনি মুক্ত হননি।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক শওকত মাহমুদ বলেন, বক্তব্য একটাই- আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। মুক্তি যতদিন না দেবেন আমরা বার বার রাস্তায় দাঁড়াব। আমরা বার বার রাজপথে নামব এবং দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন একদিন সরকার পতনের আন্দোলনে পরিণত হয়ে যাবে।
- বিসিবি বিশ্বকাপ দলে কোনো পরিবর্তন আনবে না
- মোদির আরএসএস আরেকটি মাদ্রাসা চালু করছে
- ফের বিয়ে করছেন সেলেনা, বরের বয়স ৬৮!
আয়োজক সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন- সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী,
চিকিৎসক অধ্যাপক সিরাজউদ্দিন আহমেদ, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শামসুল আলম, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, অ্যাডভোকেটে জয়নাল আবেদীন মেজবাহ, অ্যাডভোকেট শিরিন সুলতানা, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের রফিকুল ইসলাম, বিএনপির সাখাওয়াত হাসান জীবন, সাদেক আহমেদ খান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা প্রমুখ।