ভারতের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বেশি আসন পেলেও বড় ধরনের ধাক্কা খায় বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই আঘাতের মাত্রাকে বাড়িয়ে আরো ৩ জন বিধায়কসহ ৭১ জন কাউন্সিলর যোগদিলেন বিজেপিতে। এর মধ্যদিয়ে এ রাজ্যটিতেও নিজেদের অবস্থান শক্ত করলো বিজেপি।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা আনন্দবাজার এমন খবর প্রকাশ করে।
মঙ্গলবার দিল্লিতে তৃণমূলের নির্বাচিত বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের সাথে বিজেপিতে যোগ দিলেন না আরো অনেক কাউন্সিলর। অন্য দুই বিধায়কের এক জন বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য ও হেমতাবাদের সিপিএম বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়। তুষারকান্তি কংগ্রেস থেকে জিতেছিলেন। পরে তিনি দলবদল করে তৃণমূলে যোগ দেন।
বিজেপির বড় সাফল্য মূলত পৌরসভায়। উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচড়াপাড়া, হালিশহর, নৈহাটি এবং ভাটপাড়া এই চার পৌরসভাতেই ক্ষমতায় আসতে চলেছে বিজেপি। ২৪ আসনের কাঁচড়াপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানসহ ১৭ জন কাউন্সিলর এ দিন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। নৈহাটি ও হালিশহর পৌরসভার মোট আসন যথাক্রমে ৩১ ও ২৩। দুই পৌরসভা থেকেই ১৭ জন করে তৃণমূল কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ভাটপাড়া পৌরসভার ১১ তৃণমূল কাউন্সিলর আগেই যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। আজ মঙ্গলবার আরও ৮ জন যোগ দেওয়ায় সংখ্যালঘু হয়ে পড়ল তৃণমূল। এই পৌরসভায় মোট আসন ৩৫।
এর আগে রাজ্যেটিতে নির্বাচনী প্রচারে এসে বিজেপি নেতা ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, ৪০ জন বিধায়ক তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
সেই প্রসঙ্গ টেনে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, পশ্চিমবঙ্গে সাত দফায় লোকসভা নির্বাচন হয়েছিল। আমরাও সেই রকম সাত দফা কর্মসূচি নিয়েছি। এই ৭ দফায় রাজ্যের আরো অনেক তৃণমূল নেতা-নেত্রী বিজেপিতে যোগ দেবেন। মমতার শাসনে যে তৃণমূল নেতারা দমবন্ধ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন এবং তারা মুক্তির পথ খুঁজছেন।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে রাজ্যে বাম শাসনের অবসান হওয়ার পর একের পর এক পৌরসভা ও পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে আসে। বাম এবং কংগ্রেসের কাউন্সিলর, পঞ্চায়েত সদস্যরা দলে দলে ভিড়ছিলেন শাসক দলে। ক্ষমতার হাত বদল হতে হতে এক সময় কার্যত গোটা রাজ্যেই সমস্ত পৌরসভা ও পঞ্চায়েত চলে যায় তৃণমূলের হাতে। এ বার লোকসভা ভোটে তৃণমূলের বিপর্যয় এবং বিজেপির অভূতপূর্ব উত্থানের পর সেই পরিস্থিতিই ফিরে এসেছে বলে মনে করেন দেশটির রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।